ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

শিশুদের খেলনার সঙ্গে সময় কাটছে নাঈম মাঝির

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ১৯ মে ২০২২

শিশুদের খেলনার সঙ্গে সময় কাটছে নাঈম মাঝির

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার পটকা গ্রামের বাসিন্দা নাঈম মাঝি (২৬)। বয়সে যুবক হলেও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত। এক জায়গায় থমকে থাকার অস্বস্তি একজন মানুষকে কতোটা কষ্ট দেয় তার উদাহরণ এই প্রতিবন্ধী নাঈম মাঝি। 
৩ ফুটের এ মানুষটির সময় কাটছে শিশুদের খেলনার সঙ্গে অভিনয় করে। বাবা মোস্তফা মাঝির মৃত্যুর পর পৈতৃক ভিটা থেকে মা-সহ বিতাড়িত হয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই মিলছিলো না। পরে তার নানার বাড়িতে ঠাঁই হয়।  কষ্টভরা জীবনের কিছু অংশে সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেন তার প্রতিবেশীরা।
কথা হয় নাঈম মাঝির সঙ্গে। দীর্ঘ নিঃস্বাস ছেড়ে নাঈম বলেন, আশপাশে সমবয়সিদের হাঁটতে দেখে আমারও তাঁদের সাথে যেতে মন চায়। কিন্তু সে সক্ষমতা আল্লাহ আমাকে দেননি। 
তিনি আরো জানান, মাঝেমধ্যে শরীর প্রচন্ড ব্যাথা হয়। কি করবো আমরা গরীব মানুষ চিকিৎসার জন্য এতো টাকা কই পাবো? 
নাঈমের মা নাদিরা খাতুন বলেন, মানুষের বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ করে সন্তানাদিসহ শুধু বেঁচে থাকারই চেষ্টা করছি। মেম্বার-চেয়ারম্যানের পাছে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে গেছি। তারা কার্ড কইরা দিবো কইছে, কিন্তু দেয়নি। এহন আর যাইনা। হোটেলে রান্না কইরা যা পাই তাতে মিলাইয়া কোনোমতে সংসার চলে। 
প্রতিবেশীরা জানান, শারীরিকভাবে অক্ষম নাঈম সীমাহীন দুঃখের জীবনে ভিক্ষা বৃত্তি না করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন। নাঈমের মামার দখলে থাকা সরকারি জমিতে ছাপড়া ঘরে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে তার পরিবার। মা মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে যা পান তাতেই টেনেটুনে চলে তাদের সংসার।
স্থানীয় ইদ্রিস আলী বলেন, বাবা হারা ছেলেটাকে নিয়ে খুব কষ্টে কাটে তাদের সংসার। আমরাও গরীব মানুষ, মানুষের বাড়িতে কাজ করে খাই। তাদেরকে সহায়তা দেওয়ার মত সামর্থ্য আমাদের নাই।
গোসিংগা ইউপি সদস্য ও বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন বলেন, আগে কি হয়েছে জানিনা। আমি নির্বাচিত হয়ে নাঈমের খোঁজ খবর নিয়েছি। গত শীতে কম্বল ও ঈদে ১০ কেজি চাল দিয়েছি। উপজেলার ভাতার তালিকায় তার নাম দিয়েছি। 
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনজুরুল ইসলাম বলেন, নাঈমের তালিকা এখনো আমাদের কাছে আসেনি। তবে খোঁজ নিয়ে তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা হবে।

গাজীপুর কথা