ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ১৮ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

শ্রীপুরে মা দিবসে ৮ শতাধিক রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পেলেন

প্রকাশিত: ১৫:৪৩, ৮ মে ২০২২

শ্রীপুরে মা দিবসে ৮ শতাধিক রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পেলেন

মা দিবস উপলক্ষ্যে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের নান্দিয়াসাঙ্গুণ গ্রামে আট শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। ককশীটে “মা” লেখা প্রতীকসজ্জিত ছিল ক্যাম্পের চারপাশ। রোববার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাতজন চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র প্রদানের মাধ্যমে রোগীদের এ সেবা দেন। 

নান্দিয়াসাঙ্গুণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করেন স্থানীয় সুফী খসরু ভুঁইয়া। আহনাফ ফাউন্ডেশনের ব্যানারে মাওনা চৌরাস্তার আল হেরা হাসপাতালের চিকিৎসকগণ বিনামুল্যে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র প্রদান করেন।

আল হেরা হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল হোসাইন জানান, মেডিসিন, কিডনী, দন্ত, গাইনী ও শিশু বিশেষজ্ঞসহ মোট সাতজন চিকিৎসক রোগীদের ব্যবস্থাপত্র প্রদান করেন। তৃণমূলের দরিদ্র, অসহায় মানুষের দোরগোড়ায় উন্নত চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে তারা সেবা দিতে বিনামুল্যের মেডিক্যাল ক্যাম্প করেন। ক্যাম্পে ডায়াবেটিস রোগীদের বিনামূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয়।

May be an image of 4 people, people sitting and indoor

 

চিকিৎসা নেওয়া সিরাজুল হক (৭০) জানান, উন্নত চিকিৎসাসেবার জন্য থানা সদর বা জেলা সদরে যাওয়ার সক্ষমতা তার নেই। এরকম গ্রামের অনেক মানুষ রয়েছে। নিয়মিত এরকম মেডিক্যাল ক্যাম্প করা হলে তৃণমূলের অসহায়দ, দরিদ্র মানুষ উপকৃত হবে। ক্যাম্পের আয়োজক সুফী. খসরু ভুঁইয়া (৫৮) জানান, মানুষকে নিজ নিজ বাবা-মা’র সেবা করার জন্য তিনি দুই যুগের বেশি সময় কাজ করছন। নিজ গ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার শয্যাশায়ী বৃদ্ধ বাবা-মা’র সেবা করে পরিবারের লোকদের তা উপলব্ধি করানোর চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, শ্রীপুরের বরমী এলাকার একজন মা’কে শিক্ষিত ছেলেরা অসুস্থ অবস্থায় ছাগলের সাথে রেখে দিয়েছিলেন। খবর শোনে তিনি সেখান থেকে পাঁচা দুর্গন্ধযুক্ত কাপড়চোপর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেন। কয়েকদিন নিয়মিত সেবা করার পর ওই বৃদ্ধ নারীর ছেলেরা সেবা করতে বাধ্য হন। এভাবেই তিনি অসহায় শয্যাশায়ী বাবা-মা’র পাশে নিজ সন্তানদের দাঁড়াতে বাধ্য করে আসছেন। ইহজগত ও পরজগতে মুক্তির উপায় বের করতে সন্তানের জন্য বাবা-মায়ের সেবার কোনো বিকল্প নেই। তিনি নিজেও বাবা-মায়ের সেবা করেছেন। বাবা-মা’র শেষ বয়সে বাবা-মা’র মল-মূত্র নিজ হাতে পরিষ্কার করে মানুষের সেবাদানের প্রতি তার আন্তরিকতা গড়ে উঠে।

May be an image of 9 people, people standing and headscarf

তার সাথে কমপক্ষে ৫’শ স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা কলেজের সন্মান শ্রেণীর ছাত্র মোশতাক আহমেদ ফাহাদ ও নাদিমসহ তাদের মতো ত্রিশজন স্বেচাছাসেবী মেডিক্যাল ক্যাম্পে ছিলেন। তারা জানান, গত ১৫ বছর যাবত তিনিও এভাবে সেবা করছেন। এ সেবা থেকে বাবা-মা’র প্রতি সেবার মানসিকতা বৃদ্ধির পেয়েছে, মানবসেবায় উন্নত মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। আর তাদের সেবা দেখে সমাজের অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছে।

লেখক মোমিনুল ইসলাম বলেন, সক্ষম সকলকেই তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। আলহেরা হাসপাতাল নিয়মিত এরকম মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করেন।

গাজীপুর কথা