ঢাকা,  শুক্রবার  ২৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে স্ট্রবেরির ব্যাপক ফলন

প্রকাশিত: ১৬:৫৮, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে স্ট্রবেরির ব্যাপক ফলন

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে পরিত্যক্ত ভূমিতে স্ট্রবেরির ব্যাপক ফলন হয়েছে। শীতকালীন ফল হিসেবে প্রচলন থাকলেও প্রান্তিক কৃষকের কল্যাণে ও দেশের মানুষের চাহিদা পূরণে স্ট্রবেরি এখন বাংলাদেশেও ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। বাজার চাহিদা, ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় প্রতিনিয়ত স্থানীয় কৃষকের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে স্ট্রবেরি চাষ।
স্ট্রবেরি ফলের গন্ধ, বর্ণ ও স্বাদে আকর্ষণীয় এবং রস, জ্যাম, আইসক্রিম, মিল্ক শেকসহ শিল্পায়িত খাদ্য তৈরিতে স্ট্রবেরির সুগন্ধ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।
১৭৪০ সালে ফ্রান্সে প্রথম স্ট্রবেরির চাষ শুরু করা হয়। পরে চিলি, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে স্ট্রবেরি চাষ। শীতপ্রধান দেশের ফল স্ট্রবেরি হলেও বর্তমানে বাংলাদেশের যেসব এলাকায় শীত বেশি, সেসব এলাকায় বিভিন্ন জাতের স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। অনেকে বাড়ির ছাদে চাষ করলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরির চাষ শুরু হয়েছে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায়।
গাজীপুরের কাপাসিয়ার সিংহী ইউনিয়নের কুড়িয়াদী গ্রামে অনেক কৃষক নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে শীতকালীন ফসলের চাষ করে থাকেন। বর্তমানে কৃষি কাজে ভিন্নতা আনতে চলতি মৌসুমে শ্রীপুর উপজেলার মৌমিতা ফ্লাওয়ার্সের মালিক দেলোয়ার হোসেনের পরামর্শে গ্রামের অনেক কৃষক ওসব জমিতে দুই বছর ধরে স্ট্রবেরির চাষ শুরু করেছেন।
কথা হয় স্থানীয় কৃষক ছাব্বির আহমেদের সাথে। তিনি বলেন, গত বছর ট্রবেরি চাষ ভালো হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে দেশে লকডাউন থাকায় ফল বিক্র করতে না পারায় লাভ হয়নি। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি এতে লাভ আছে। সরকারিভাবে লোন বা প্রণোদনা দিলে আরও লাভ হতো বলে তিনি জানান।
পাশাপাশি নদীর চরে স্ট্রবেরির চাষ করেছেন একই এলাকার আরিফ প্রধান। তিনি বলেন, ১ বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করতে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয়। ফলন ভালো হলে ছয় থেকে সাত লাখ টাকা বিক্রি করা যায়।
কথা হয় স্ট্রবেরি চাষি সিফাত মীরের বাবার সাথে। তিনি বলেন, কৃষি কাজ করা ভালো, সবাই করে। শিক্ষিত ছেলেরাও করে, আমার ছেলে কৃষি কাজ করে। এতে আমার খারাপ লাগে না। এই ফলটা বিক্রি করে লাভবান হলেই আনন্দিত। পতিত জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করে ভালো ফলনও পেয়েছেন কৃষকরা। এই স্টবেরি চাষ দেখে এলাকার অনেক কৃষক আগামী মৌসুমে চাষে আগ্রহী হচ্ছেন, এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
গাজীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মাহবুব আলম বলেন, স্ট্রবেরি ফলের মধ্যে উচ্চমাত্রায় পুষ্টি রয়েছে। এ ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রোগমুক্তিতেও সহায়তা করে। গাজীপুরে স্ট্রবেরির চাষ হলেও আমরা এর পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারিনি। অনেকে শখে বাসা-বাড়িতে স্ট্রবেরির চাষ করলেও এখন কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। এটি লাভজনক বিধায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান রাখবে বলেও মনে করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ওই উপ-পরিচালক।

গাজীপুর কথা