গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বন বিভাগের অধিকাংশ অফিস ও থাকার ঘরের দেয়ালে বড় বড় ফাটলের সৃষ্টি ও জরাজীর্ণ হয়েছে। জরাজীর্ণ ভবনের নিচেই চলছে কার্যক্রম। ফলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বন বিট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
জানা গেছে,উপজেলায় প্রায় সাড়ে ২১ হাজার একরের বেশি বন রয়েছে। এ বনকে কালিয়াকৈর ও কাচিঘাটা দুটি রেঞ্জে ভাগ করা হয়েছে। দুটি রেঞ্জের আওতায় ১২টি অফিস রয়েছে। দুটি রেঞ্জের কালিয়াকৈরের ও কাচিঘাটা রেঞ্জের আওতায় চন্দ্রা, বোয়ালী, মৌচাক, রগুনাথপুর, জাথালিয়া, খৈলশাজানি, বাড়ইপাড়া, কাশিমপুর নামে ৮টি বিট অফিস আছে। এছাড়া সাভার, ভান্নারা, গোবিন্দপুর ও নলুয়া নামে আরও চারটি সাব বিট অফিস ও রগুনাথপুর বিটের আওতাধীন গলাচিপা এলাকায় একটি বিট ক্যাম্প রয়েছে। সাভার সাব-বিট অফিস ও গলাচিপা ক্যাম্পকে পূর্ণাঙ্গ বিট অফিস করা প্রয়োজন। বিট অফিসগুলোতে আরও টহল ব্যবস্থা বাড়াতে হবে। উচ্ছেদ অভিযানের জন্য একটি দক্ষ টিমের প্রয়োজন। অনেক সময় উচ্ছেদ অভিযানে ঘর ভাঙা, ভারী গাছ ওঠানোর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তাই অনেক সময় উচ্ছেদ অভিযানে একটু সময় লেগে যায়।
রেঞ্জ অফিসে একটি নিজস্ব পিকআপ গাড়ির প্রয়োজন। দুটি রেঞ্জ ও বিট অফিসে বন প্রহরার জন্য নেই কোনো নিজস্ব যানবাহন। বিট অফিসগুলোতে কোনোটিতে মোটরসাইকেল আছে, কোনোটিতে নেই। যাও আছে অকেজো বা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। উপজেলার কাচিঘাটা রেঞ্জ অফিস ও এর আওতাধীন তিনটি বিট অফিসে কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ২৩ জন। রেঞ্জ অফিসের ঘর আছে ৮টি। দুটি আধাপাকা ও ৬টি কাঁচা ঘর। এগুলো সংস্কার না করায় ভেঙে পরিত্যক্ত। এ জরাজীর্ণ ঘরে সদর রেঞ্জ অফিস ও বিট অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। কাচিঘাটা রেঞ্জের আওতায় জাথালিয় বিট অফিস ও থাকার ঘরের চালা বাইরে থেকে গাছের খুঁটি দিয়ে কোনোমতে ঠিকা দিয়ে টিনের চাল ধরে রাখা হয়েছে। ঘরের দেয়ালে ফাটল ধরে ইট সরে গেছে।
অন্যদিকে, খলিশাজানি বিট অফিসের ইটের পিলার সরে গেছে। যেকোনো সময়ও সেটি ধসে পড়তে পারে।
একজন বন প্রহরী বলেন, বনের ভেতরে অফিস থাকায় আশপাশে কোনো বাড়ি নেই যেখানে বাড়ি ভাড়া করে থাকব। তাই বাধ্য হয়ে জরাজীর্ণ ঘরের ভেতরে বসবাস করতে হচ্ছে। কালিয়াকৈর রেঞ্জ ও বিট অফিস ও এর আওতাধীন অফিসগুলোর অবস্থা আরও ভয়াবহ, কালিয়াকৈর সদর রেঞ্জ ও বিট অফিসগুলোতে রয়েছে দক্ষ জনবলের অভাব। কালিয়াকৈর রেঞ্জ ও ৬টি বিট অফিসে কর্মকর্তা আছে ৭২ জন। বন ও ভূমিদস্যুদের মোকাবিলা করার নেই হাতিয়ার। এসব বিট অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আতঙ্কের মধ্যেও জরাজীর্ণ ঘরে চলছে অফিস কার্যক্রম ও মানবেতর জীবনযাপন। বিট অফিসগুলোতে যেমন রয়েছে ভবনের অভাব, তেমনি রয়েছে দক্ষ জনবলের অভাব। জরাজীর্ণ ঘরের ভেতরে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বিট কর্মকর্তা-কর্মচারী।
কালিয়াকৈরের ফুলবাড়িয়া কাচিঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ঢাকা হেড অফিসে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত জরাজীর্ণ ভবন গুলোর কাজ করা হবে।
গাজীপুর কথা