ঢাকা,  বুধবার  ২৪ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কাপাসিয়ায় শিক্ষার্থীদের বরণে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত

প্রকাশিত: ১৫:৪৮, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১

কাপাসিয়ায় শিক্ষার্থীদের বরণে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত

দেশব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি ঘোষণায় গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রস্তুতি ছড়িয়ে পড়েছে। শ্রেণীকক্ষ ঝাড়ু দেওয়া, বাথরুম পরিচ্ছন্ন করা, মাঠ পরিষ্কার করা, প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন ভবনের আশপাশের ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কারসহ নানা কাজে শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যস্ত হতে দেখা গেছে।উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক, কিন্ডাগার্টেন ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিরস্কার পরিচ্ছন্ন রয়েছে। শ্রেণি কক্ষে শ্রেণি বিন্যাস করে ক্লাসে উপযোগি করে তুলেছেন বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান।
কাপাসিয়ার লোহাদী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা সুলতানা ও সহকারি শিক্ষক শাহ আলম মিলন বেশ কয়েকজন কর্মী দিয়ে সশরীরে পরিচ্ছন্নতাকাজ তদারকি করছেন। প্রধান শিক্ষক জানান, দীর্ঘদিনের বন্ধ থাকায় অনেক শ্রেণীকক্ষে মাকড়সার জাল, টিকটিকি বাসা বেঁধেছিল। ইতোমধ্যে শ্রেণীকক্ষগুলো ঝাড়মুছ দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী পানি ব্যবহার করে পরিষ্কার করা হয়েছে। সন্ধ্যা অবদি বাথরুম ও স্বাস্থবিধি পালনে ব্যবহার্য্য সকল ক্ষেত্রগুলোর পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ হবে। এছাড়া একপাশে বিদ্যালয়েন নির্মাণকাজ কাজ চলছে। একই ক্যাম্পাসে মাঠের একপাশে রয়েছে লোহাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরও পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত থাকতে দেখা গেছে।
কাপাসিয়া উপজেলার ভুলেশ্বর হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন সহকর্মী শিক্ষকদের নিয়ে পরিচ্ছন্নতা কাজের তদারকি করছেন। তিনজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী বিদ্যালয়ের আঙ্গিণা কোদাল দিয়ে পরিষ্কার করে মাঠের একপাশে ডাস্টবিনে ফেলছেন।
 প্রধান শিক্ষক জানান, সকল শ্রেণীকক্ষ এখন থেকেই ক্লাস করার উপযোগি। ভুলেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি বিশেষ ঐতিহ্য রয়েছে। এ বিদ্যালয়ে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ শৈশবকালে পড়াশোনা করেছেন। ভুলেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি ঘোষণার পর থেকেই আমরা বিদ্যালয়ে প্রতিদিন কাজ করছি। শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং মাঠে খেলাধূলাসহ শিশুদের ক্লাসে মনোযোগী করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। বিদ্যালয়টির পাশেই রয়েছে হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়েও পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হচ্ছে।
উপজেলার শালদৈ ফাযিল ডিগ্রি মাদরাসার অধ্যক্ষ শিক্ষক হাফেজ মো. তাজুল ইসলাম ও শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এ বিদ্যালয়ে পাঠদান করা হয়। ইতোমধ্যে শ্রেণি কক্ষ, মাঠ ও চারপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। গাজীপুর ক্যাডেট একাডেম, আমরাইদ কিন্ডারগার্টেনসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ব্যাস্ত পরিচ্ছন্নতা কাজে। গাজীপুর ক্যডেট প্রতিষ্ঠান প্রধান মিজানুর রহমান মিলন ও উম্মে কুলসুম শিল্পীকে প্রতিষ্ঠান অফিসে বসে অভিভাবকদের সাথে স্বাস্থ্য বিধি বিষয়ে যোগাযোগ করতে দেখা গেছে।  
কাপািসয়ার লোহাদী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শিফা হক জানায়, স্কুল খুলবে, কি যে আনন্দ লাগছে। এ শুধু লেখাপড়ার আনন্দ নয় এটা আমাদের প্রাণের আনন্দ। আমরাইদ কিন্ডারগার্টেন পিইসি পরীক্ষার্থী  তাছনিম জানায়, আমি খুব খুশি। স্কুল খুলবে, মাঠে খেলবো, পড়াশোনা করবো। স্কুল খুলবে শুনে খুব ভালো লাগছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল প্রধান জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে বলেছে স্কুল খুলবে কিন্তু পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা পাইনি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ভারপ্রাপ্ত সানজিদা আমীন জানান, মন্ত্রণালয় নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ. ছালাম জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে বার্তা প্যেঁছে দিয়েছি।
গাজীপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা জানান, জেলায় মাধ্যমিক থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত মোট ৬৭৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠান আঙ্গিণা পাঠোপযোগী করতে সরকার থেকে ঘোষণার পরই আমরা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক বার্তা পৌঁছে দিয়েছি। সরকারি ১৯টি নির্দেশনা কার্যকর করতে নিয়মিত পরিদর্শন ছক করে একাধিক দল গঠন করে দেওয়া হয়েছে। দলভিত্তিক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে নির্দেশনার শতভাগ বাস্তবায়নের জন্য মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাগণ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন।

গাজীপুর কথা