ঢাকা,  মঙ্গলবার  ১৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

শ্রীপুরে ড্রাগন চাষে ৩ বন্ধুর সফলতা

প্রকাশিত: ১৮:১১, ৮ জুলাই ২০২১

শ্রীপুরে ড্রাগন চাষে ৩ বন্ধুর সফলতা

গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রথমে তিন বন্ধু শখের বশে শুরু করেন ড্রাগন চাষ। পরে শখটাই হয়ে যায় পেশা। এরপর বাণিজ্যিকভাবে এ ফলের চাষ শুরু করেন। গতানুগতিক কৃষির ওপর নির্ভরশীল না হয়ে সময়ের প্রয়োজনে লাভজনক ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন শ্রীপুরের চাষিরা। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ড্রাগনের চাষ। এখানকার মাটি এফল চাষের জন্য উপযোগী। পরীক্ষামূলকভাবে ড্রাগন চাষ করে সফলতা পেয়েছেন এ উপজেলার অনেক চাষি।

শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের গাড়ারন এলাকায় তিন ইঞ্জিনিয়ার বন্ধু মনিরুল হক, আলী হায়দার ও আশরাফ হোসেন মিলে ৭৮ শতাংশ জমিতে এ ফলের চাষ শুরু করেন। তারা তিন বছর ধরে চাষ করছেন।

এই ফলটি এক ধরনের ফণীমনসা (ক্যাক্টাস) প্রজাতির।  ইংরেজি নাম Pitaya এবং বৈজ্ঞানিক নাম Hylocereus undatus। গণ চীনের লোকেরা একে ফায়ার ড্রাগন ফ্রুট এবং ড্রাগন পার্ল ফ্রুট বলেন, থাইল্যান্ডে ড্রাগন ক্রিস্টাল, ভিয়েতনামে সুইট ড্রাগন, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াতে ড্রাগন ফ্রুট নামে পরিচিত। অন্যান্য স্বদেশীয় নাম হলো স্ট্রবেরি, নাশপাতি। ড্রাগন ফল দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও মনোমুগ্ধকর। পাতাবিহীন এই ফলটি দেখতে ডিম্বাকার ও লাল রঙের। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এই ফলের বাইরের খোসা দেখতে রূপকথার ড্রাগনের পিঠের মতো। এই রূপকথার ড্রাগনের মতো কিছুটা মিল থাকার জন্য একে ড্রাগন ফল বলে। এটি প্রচুর ভিটামিন সি, মিনারেল এবং উচ্চ ফাইবার যুক্ত। জুস তৈরিতে ফলটি অত্যন্ত উপযোগী।

ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল হক (কাঞ্চন) বলেন, বর্তমানে আমাদের বাগানে প্রায় ৫ হাজার ড্রাগন ফলের গাছ রয়েছে। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৬-১৭ লাখ টাকা। প্রতিটি গাছেই ফল আসা শুরু করেছে। আশা করছি এবছর ৬-৭ টন ফল সংগ্রহ করা যাবে। যার প্রতিটন ফলের বাজার মূল্য রয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে।

বাগানের ব্যবস্থাপক মোতালেব হোসেন জানান, বাগানটির নিরাপত্তার জন্য ১৪টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এখান থেকে ফলের চারাও বিক্রি করা হয়। সাইজ অনুযায়ী চারার মূল্য নির্ধারণ করা হয়। ছোট চারা ৩০ টাকা, মাঝারি ৫০, বড় চারা ৭০ টাকা করে বিক্রি করা হয়।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মূয়ীদুল হাসান বলেন, ড্রাগন একটি পুষ্টিকর ফল। শ্রীপুরে প্রায় ২২ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। দুই ধরনের ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে শ্রীপুরে। তারমধ্যে একটি ভেতরে বেগুনী বর্ণের, এটি খেতে অনেক মিষ্টি, আর অন্যটি ভিতরে সাদা বর্ণের, এটি খেতে নোনতা নোনতা লাগে। এফলে রয়েছে অধিক পরিমাণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। অল্প খরচে অধিক লাভ হয় বলে অনেকেই এই ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। দেশে বাণিজ্যিকভাবে এফল চাষ হলে বাইরের দেশ থেকে আর আমদানি করতে হবে না বলেও জানান ওই কৃষি কর্মকর্তা ।

গাজীপুর কথা