ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ২৫ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

মনিটরিং টিম করতে হবে ॥ হাইকোর্ট

ফ্লাইওভারের দেওয়াল লিখন ও পোস্টার সরানোর নির্দেশ

প্রকাশিত: ১৬:১৯, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ফ্লাইওভারের দেওয়াল লিখন ও পোস্টার সরানোর নির্দেশ

রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের পিলারগুলো ঢেকে ফেলা হয়েছে নানা ধরনের পোস্টারে

রাজধানীর সব ফ্লাইওভার থেকে দেওয়াল লিখন এবং দেওয়ালে থাকা পোস্টার আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানোর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী সাত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে একটি মনিটরিং টিম করতে বলা  হয়েছে। ওই টিম ফ্লাইওভারগুলোতে দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো নিয়ন্ত্রণ করবে।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ প্রদান করেছেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী  অ্যাটর্নি জেনারেল আবু দাউদ।
শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, পোস্টার লাগিয়ে ফ্লাইওভারের পিলারগুলোর কী অবস্থা বানিয়ে ফেলছে। প্রতিদিন এগুলোর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময়  দেখে কী যে কষ্ট লাগে। পোস্টার লাগিয়ে আমাদের শহরটার সৌন্দর্য ধ্বংস করে ফেলেছে। এগুলো অপসারণ করতেই হবে। এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আইনজীবী মো. সরওয়ার আহাদ ও রিপন বাড়ই রিট দায়ের করেন।

আদালত রুলে  ফ্লাইওভারগুলোতে দেওয়াল লিখন ও পোস্টার অপসারণের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১২ এর ৬ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া আগামী ৭ দিনের মধ্যে একটা মনিটরিং টিম করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে টিম ফ্লাইওভারগুলোতে দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো নিয়ন্ত্রণ করবে। আদালতে রিটের পক্ষের শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

ঢাকার ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন স্থাপনার দেওয়ালে  থাকা অবৈধ পোস্টার নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, পোস্টারিং ও অবৈধ দখল নগরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। প্রতিটি নাগরিকের খোলা জায়গার অধিকার আছে উল্লেখ করে আদালত আরও বলেন, ‘পোস্টার লাগিয়ে ফ্লাইওভারের পিলারগুলোর কী অবস্থা বানিয়ে ফেলছে। প্রতিদিন এগুলোর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখে কী যে কষ্ট লাগে। পোস্টার লাগিয়ে আমাদের শহরটার সৌন্দর্য ধ্বংস করে ফেলেছে। এগুলো অপসারণ করতেই হবে।’

রিটে ফ্লাইওভারের দেওয়ালে পোস্টারিং ও দেওয়াল লিখন বন্ধে তদারকি কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন বাস্তবায়নের নির্দেশনা চাওয়া হয়। রিটে স্থানীয় সরকার সচিব, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী, রাজউকের চেয়ারম্যান, ঢাকার পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। প্রসঙ্গত, দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী ‘নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাবে না।

আইনে বলা হয়েছে, কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগাবার জন্য প্রশাসনিক আদেশ দ্বারা স্থান নির্ধারণ করে দিতে পারবে এবং উক্তরূপে নির্ধারিত স্থানে দেওয়াল  লিখন বা পোস্টার লাগানো যাবে। তবে শর্ত থাকে যে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে, উল্লিখিত  নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে এবং নির্দিষ্ট ফি প্রদান সাপেক্ষে দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাবে। কোনো ব্যক্তি এই বিধান লঙ্ঘন করলে তা এই আইনের অধীন অপরাধ।