ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ২৫ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

সমতা নিশ্চিতে কন্যাশিশুর অধিকার রক্ষা করতে হবে

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ৪ অক্টোবর ২০২২

সমতা নিশ্চিতে কন্যাশিশুর অধিকার রক্ষা করতে হবে

মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা

নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিত করতে হলে কন্যাশিশুর অধিকার রক্ষা করতে হবে মন্তব্য করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, মানসম্মত শিক্ষা ও পুষ্টিসহ অন্যান্য অধিকার নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আমাদের কন্যাশিশুদের গড়ে তুলতে হবে। তাহলে তারা রাষ্ট্রের সম্পদে পরিণত হয়ে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে এবং নারী-পুরুষের সমতার পরিবেশ গড়ে উঠবে।

জাতীয় কন্যাশিশু দিবস ২০২২ উপলক্ষে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর শিশু একাডেমি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিগত কয়েক দশকে নারী ও কন্যাশিশুদের কল্যাণে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে তাদের প্রতি সমাজের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হচ্ছে, তারা শিক্ষিত ও সচেতন হয়ে উঠছে। এ ছাড়াও মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় নারী উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন, শিশু সুরক্ষা, অধিকার প্রতিষ্ঠা, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, শিশুর পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, শিশু নির্যাতন, শিশু পাচার রোধসহ শিশুর সামগ্রিক উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

তিনি জানান, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১-এর যথাযথ বাস্তবায়নের ফলে কন্যাশিশুর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণ ও সব ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এক দশক আগে প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে ছাত্রী ভর্তির হার ছিল ৬১ শতাংশ, বর্তমানে যা ৯৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, সরকার নারী ও শিশুবান্ধব। মনঃকষ্টে, সমাজের চাপে অনেক কন্যাশিশু আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়, যা কষ্টকর। কেউ মনঃকষ্টে ভুগলেও ১০৯ নম্বরে কল করলে কাউন্সেলিং সেবা পাবে। নির্যাতন প্রতিরোধেও মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এ নম্বরে কল করে তাৎক্ষণিক সেবা গ্রহণ করা সম্ভব।

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি বলেন, ‘আমাদের কন্যাশিশুরা সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। তাদের জন্য যদি সব ক্ষেত্রে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়, তাহলে তারা আকাশ সমান সফলতা অর্জন করতে পারবে।’

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম, মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহসম্পাদক রাবেয়া বেগম, শিক্ষার্থী তাবাসসুম আক্তার, ফারহানা খাতুন, সামিয়া জাহান, নন্দিতা আক্তার হাফসা প্রমুখ।

আলোচনা শেষে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২২ উদ্‌যাপন উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় তিন গ্রুপে মোট ১৫ জন বিজয়ী শিশুর হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। ‘ক’ গ্রুপে পুরস্কার অর্জন করেছে মুনিবা মাজহার, অয়ন বর্মন, সমৃদ্ধি মন্ডল (রিমঝিম), আমিনা হক মৃণ্ময়ী ও নুর-ই-আনজুম সারা। ‘খ’ গ্রুপের পুরস্কারজয়ীরা হলো: ফাইজা আলম, প্রকৃতি চৌধুরী, মিথিলা ভৌমিক, তামান্না আক্তার ও মোছা. ফাতিহা জান্নাত মাহি এবং ‘গ’ গ্রুপের পুরস্কারজয়ীরা হলো: অধরা চক্রবর্তী, আনিশা সান্তনি, অর্নিলা ভৌমিক, আদৃতি প্রিয়ন্তী বসু ও চাঁদনী আক্তার।

দিবসটি উপলক্ষে কন্যাশিশুর উন্নয়নে কাজ করা ২২টি সংগঠন ও শিশুদের নিয়ে একটি র‍্যালি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুল থেকে শুরু করে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।