ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ২৮ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

সুগন্ধায় একে একে ভাসছে লাশ, খুঁজছেন স্বজনরা

প্রকাশিত: ১৪:২১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১

সুগন্ধায় একে একে ভাসছে লাশ, খুঁজছেন স্বজনরা

ঝালকাঠিতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে সুগন্ধা নদীতে নিখোঁজদের লাশ ভাসতে শুরু করেছে। আর লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছেন স্বজনরা। মঙ্গলবার সকালে ঝালকাঠি লঞ্চঘাট সংলগ্ন সুগন্ধা নদীর দক্ষিণে ৩৫ বছর বয়সী এক যুবকের লাশ ভেসে ওঠে। দুপুরে ভেসে ওঠে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের লাশ।

যুবকের লাশে পোড়াদাগ থাকলেও কিশোরের শরীরে কোনো দাগ পাওয়া যায়নি। তবে লাশ উদ্ধার করে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডির নমুনা সংগ্রহের পর ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঝালকাঠি সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, সকালে সুগন্ধা নদীর দক্ষিণ পাড়ের গ্রাম কিস্তাকাঠি এলাকায় লাশ ভাসতে দেখে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে লাশ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

তিনি আরো বলেন, দুপুরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার সাচিলাপুর এলাকায় বিষখালী নদী থেকে এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ড। এছাড়া সোমবার সকালে ঝালকাঠির বিশখালী নদীর নাপিতেখাল এলাকায় আরো এক লাশ ভেসে ওঠে। তার পরনে ছিল কালো গেঞ্জি ও লুঙ্গি। তার শরীরেও পোড়াদাগ ছিল।

সোমবার সুগন্ধা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া যুবকের নাম শাকিল মোল্লা। ৩৩ বছর বয়সী শাকিল নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ইসদাইক এলাকার শফিউদ্দিনের ছেলে। তিনি অভিযান-১০ লঞ্চের বাবুর্চি হিসেবে ছিলেন। প্রায় এক মাস আগে তিনি এ চাকরি নেন।

ঝালকাঠি সদর থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক আব্দুল মালেক জানান, সোমবার রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে শাকিলের লাশ শনাক্ত করেন তার মামা লুৎফর রহমান। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে লাশ নিয়ে তারা নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

শাকিল মোল্লার ছোট বোন শাহিদা আক্তার নিশা বলেন, আমরা দুই ভাই-বোন। আমার ভাই বিয়ে করেননি। আগুনের খবর ভাইয়ের বন্ধুদের কাছ থেকে শুনেছি। ফেসবুকে খবর পেয়ে ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করি। তিনি আরো বলেন, গত দুই মাসে আমার সঙ্গে ভাইয়ের কথা হয়নি। তবে তিন-চারদিন আগে মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে তার।

লঞ্চ দুর্ঘটনার পর থেকে এখনো অসংখ্য যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন। প্রাণে বাঁচতে অনেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। নিখোঁজদের মধ্যে ৫১ জনের তালিকা তৈরি করেছে ঝালকাঠি রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি। পুলিশের কাছেও ৪১ জনের নাম দিয়েছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। নিখোঁজদের সন্ধান পেতে শুক্রবার সকাল থেকেই অনেক স্বজন ঝালকাঠি শহরে রয়েছেন।

২৩ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশ্যে যাওয়া এমডি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে। এতে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন অনেকে। পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে যাত্রীর সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে লঞ্চটিতে প্রায় ৩১০ যাত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। কিন্তু বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকে বলেছেন, যাত্রী ছিলেন পাঁচ শতাধিক।

গাজীপুর কথা