ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও ৪০ জন নিহতের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে র্যাব।
সোমবার রাতে কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা জানান। এর আগে এদিন সকালে কেরানীগঞ্জ থেকে লঞ্চটির মালিক হামজালাল শেখকে গ্রেফতার করা হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া লঞ্চ ‘এমভি অভিযান-১০’ এ গত নভেম্বর মাসে অতিরিক্ত অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন সংযোজন করা হয়। এর জন্য নেয়া হয়নি কোনো অনুমোদন।
তিনি আরো বলেন, লঞ্চটিতে আগুন লাগার ১০ মিনিটের মধ্যে সুপারভাইজার আনোয়ার মোবাইল ফোনে মালিক হামজালালকে আগুন লাগার বিষয়টি জানান। কিন্তু তিনি কোনো সংস্থা বা জরুরি সেবা কোথাও জানাননি, বরং চুপচাপ থাকেন। আগুন লাগার পর লঞ্চের ক্রুরা (২৬ জন) জ্বলন্ত ও চলন্ত লঞ্চ রেখে পালিয়ে যান। এতেই ঘটনাটি আরো মর্মান্তিক হয়। এছাড়া লঞ্চে কর্মরত তিনজনের (মাস্টার ও ড্রাইভার) সরকারি কোনো চালনার অনুমোদন ছিল না।
কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেফতার মালিকের তথ্য অনুযায়ী, ঘাট থেকে বিলম্বে লঞ্চ ছাড়লেও গন্তব্যে আগে পৌঁছানো গেলে লঞ্চে যাত্রী বেশি পাওয়া যায়। এ জন্য লঞ্চে ৬৮০ হর্স পাওয়ার ইঞ্জিন পরিবর্তন করে ৭২০ হর্স পাওয়ার ইঞ্জিন সংযোজন করা হয়। কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে ইঞ্জিন পরিবর্তন করা হয়নি।
যাত্রীদের জন্য কোনো লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা ছিল না জানিয়ে র্যাবের মুখপাত্র বলেন, লঞ্চে শুধু কর্মচারীদের জন্য ২২টি লাইফ জ্যাকেট ছিল। যাত্রীদের জন্য ১২৭টি বয়া ছিল বলে গ্রেফতার মালিক জানিয়েছেন। তবে অধিকাংশ বয়াই যথাস্থানে ছিল না। এ ছাড়া লঞ্চটির কোনো ইনস্যুরেন্সও করা ছিল না বলে গ্রেফতার হামজালাল শেখ জানিয়েছেন।
গত ২৩ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দিবাগত গভীর রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অভিযান-১০ এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এদের মধ্যে ৩৭ জনের বাড়িই বরগুনায়। ওই ঘটনায় আহত শতাধিক যাত্রী। নিখোঁজ অনেকে।
গাজীপুর কথা