ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ওরাল হেলথ ও খাদ্য নির্বাচন

প্রকাশিত: ১৭:৩০, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২

ওরাল হেলথ ও খাদ্য নির্বাচন

প্রতীকী ছবি

আমাদের শরীরের সুস্থতার জন্য যেমন পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন তেমনি আমাদের মুখের স্বাস্থ্য যেমন দাঁত, মাড়ি, জিহ্বার স্বাস্থ্যও অনেকাংশেই পুষ্টিকর খাবারের ওপর নির্ভরশীল।

ওরাল হেলথ বা মুখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো মন্দ খাবার, খাবারের ধরণ, খাওয়ায়ার পরিমাণ সবকিছুর সঙ্গে সম্পর্কিত। কোনো ধরণের খাবারগুলো দাঁত, মাড়ি, মুখ গহ্বর, জিহ্বার জন্য উপকারি এবং কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলা জরুরি তা আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না।

দাঁতের জন্য উপকারি খাবার

তৈলাক্ত মাছ: ওমেগা-৩, ভিটামিন-ডি মাড়ি ও দাঁতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। যা তৈলাক্ত মাছ থেকে পাওয়া যায়। অনেকের মাড়িতে ব্যাথা, মাড়ি থেকে রক্তপাত, দাঁত থেকে মাড়ি আলগা হয়ে যাওয়ার সমস্যা থাকে। ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার এই সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে ভিটামিন-ডি দাঁতের এনামেল গঠনে কার্যকর। ক্যালসিয়ামের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতেও ভিটামিন-ডি কাজ করে। টুনা, স্যামন, পাঙ্গাশ ওমেগা-৩ ও ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ মাছ। এছাড়া বাদাম, দুধ, ডিম দাঁতের জন্য উপকারি।

সবুজ শাক-সবজি: আমাদের মুখে যে ব্যাক্টেরিয়া আছে তার মধ্যে কিছু আছে উপকারি ব্যাক্টেরিয়া এবং কিছু আছে অপকারি। সবুজ শাক-সব্জি উপকারি ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং খারাপ ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ কমায়। প্রচুর মিনারেল থাকায় এগুলো দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে। অনেকের মুখে ঘা হওয়ার প্রবণতা থাকে। বি-ভিটামিন এর ঘাটতি থাকলে অনেক সময় এই সমস্যা দেখা দেয়। সমৃদ্ধ সবুজ শাক-সব্জি এই ঘা সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

সাইট্রাস ফল: লেবু, কমলা, মাল্টা, আঙ্গুর সাইট্রাস ফলের মধ্যে বহুল পরিচিত। যা ভিটামিন-সি তে ভরপুর। মুখে ঘা, যেকোন ক্ষত, রক্তপাত কমাতে ভিটামিন সি কার্যকর। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে সাইট্রাস ফল গ্রহণ অনেক সময় এনামেল ক্ষয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পানি: আমাদের শরীরের প্রায় ৭০% পানি। শরীরের সুস্থতার পাশাপাশি মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে পানি। পর্যাপ্ত পানির অভাবে মুখ শুকিয়ে যাওয়া, দুর্গন্ধ, মুখে লালার পরিমাণ কমে যাওয়া ও অন্যান্য রোগ দেখা দেয়। পানি খাবারের অবশিষ্টাংশ মুখে জমতে দেয় না। অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানীয়, খাবার দাঁতের জন্য বিপদ ডেকে আনে।

সামুদ্রিক খাবার: সমুদ্রের পার্শ্ববর্তি এলাকায় জন্মানো খাবার ফ্লোরাইড যুক্ত হওয়ায় এই ধরণের খাবার গুলো দাঁতের জন্য উপকারি। এছাড়া অন্তত সপ্তাহে একদিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। কেননা এই মাছে দাঁতের জন্য উপকারি অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে।

দাঁতের যত্নে যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন

মিষ্টি জাতীয় খাবার, ড্রাই ফ্রুট, কুকিজ, সফট ড্রিংক, শক্ত খাবার, পেস্ট্রি, ক্যান্ডি, সাদা চিনি, অতিরিক্ত পরিমাণ চা ও কফি মুখের সুস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এই ধরণের খাবার মুখের অপকারি ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করে, সেনসিটিভিটি, ইনফেকশন, প্রদাহ, দাঁতের ক্ষয় ও হলদে ভাব সহ অনেক ধরণের ক্ষতি করে থাকে। তামাক, ধূমপান, এলকোহল এগুলো ওরাল ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। 

পুষ্টিকর খাবার, মুখের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, ক্ষতিকর খাবার এড়িয়া চলা আমাদের ওরাল হেলথ ভালো রাখতে সাহায্য করবে। 

 

লেখক: জান্নাত আরা ঊর্মি, পুষ্টিবিদ