ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

আফগানিস্তানে নারীদের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২০ মে ২০২২

আফগানিস্তানে নারীদের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা বাড়ছে

আফগানিস্তানে বাদাখশান প্রদেশে গত তিন মাসে অন্তত ৩০ জন আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। পরবর্তীতে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এই তথ্য জানান। খবর এএনআই নিউজ।

স্থানীয় প্রাদেশিক হাসপাতালের প্রধান হোমায়ুন ফুরাতান বলেন, আত্মহত্যার চেষ্টাকারী বেশিরভাগ রোগীই নারী। এরমধ্যে দুইজন মারা গেছেন এবং অন্যান্যদের উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত তিন মাসে আত্মহত্যার চেষ্টার ২৯টি ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ২৭ জনই নারী এবং অন্য দুইজন পুরুষ।

স্থানীয় চিকিৎসকদের মতে, পারিবারিক সহিংসতা এবং দারিদ্র্য এসব ঘটনার প্রধান কারণ। তিনি বলেন, দারিদ্র্য ও বেকারত্বই আত্মহত্যার প্রধান কারণ। সেইসঙ্গে যাদের স্বামী-স্ত্রী বেকার এবং যারা প্রচণ্ড অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছে।

একইভাবে স্থানীয় প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগে রয়েছে। এছাড়া তাদের আরও একটি উদ্বেগের জায়গা রয়েছে। তা হলো যুবকদের সংখ্যা বৃদ্ধি। এদিকে ফুরাতান এ-ও মনে করেন, দারিদ্র্য এবং বেকারত্বের পাশাপাশি পারিবারিক সহিংসতার কারণেও মহিলাদের আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে।

সম্প্রতি এক নারীর স্বামী আত্মহত্যা করেছেন  বাদাখশান প্রদেশে। তিনি বলেন, পারিবারিক সমস্যা এবং দারিদ্র্যই তার স্বামীর আত্মহত্যার প্রধান কারণ। তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী এবং আমি দুজনেই বেকার ছিলাম। যখন সন্তানরা তার কাছে কিছু চাইতো, তার কাছে তাদের জন্য কিছু কেনার টাকা ছিল না এবং সে সারাক্ষণ চিন্তিত ছিল।

বাদাখশানের বাসিন্দারা আত্মহত্যার চেষ্টাকারী নারী ও যুবকদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্যাতন, অত্যাচারসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্বব্যাপী নারীদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। তবে আফগানিস্তানের চিত্রটা যেন বেশিই উদ্বেগজনক। দেশটিতে যত আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটে, তার ৮০ শতাংশই ঘটান নারীরা।

আফগান ইনডিপেনডেন্ট হিউম্যান রাইটস কমিশনের (এআইএইচআরসি) তথ্যমতে, প্রতিবছর তিন হাজার আফগান নারী আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। যার অর্ধেকই ঘটে হেরাত প্রদেশে।

আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয়ের জন্য তালেবান সরকার এবং দেশটির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেছে জাতিসংঘ। পাশাপাশি আফগান নারীদের অধিকার নিশ্চিত না হওয়ার বিষয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। গত ২৫ এপ্রিল আফগানিস্তানের নারীদের অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না জানিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বৈশ্বিক এ সংস্থাটি জানায়, আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার বঞ্চিত হওয়ার মূল কারণ তালেবান সরকারের দেওয়া বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা।

এদিকে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে বেকারত্বের হার।  এরই মধ্যে মার্কিন বিভিন্ন সংস্থার জরিপে দেখা যায় এখন পর্যন্ত দশ লাখেরও বেশি মানুষ বেকার হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেই তালেবান সরকারের। আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে একের পর এক সংকট লেগেই আছে। এর মধ্যে দেশটিতে নারীদের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ তো আছেই।

গাজীপুর কথা