ঢাকা,  শুক্রবার  ২৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

আক্কেল দাঁত নিয়ে বিজ্ঞানীরা বিস্ময়কর তথ্য জানালেন

প্রকাশিত: ১৩:৫১, ১ জুলাই ২০২১

আক্কেল দাঁত নিয়ে বিজ্ঞানীরা বিস্ময়কর তথ্য জানালেন

আক্কেল দাঁত তুললে মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়- এমন বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে নতুন একটি গবেষণায়। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া স্কুল অব ডেন্টাল মেডিসিনের গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন, আক্কেল দাঁত তোলার পর মুখের স্বাদ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। 

মুখের স্বাদের ওপর আক্কেল দাঁত তোলার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কিত এটিই প্রথম গবেষণা। গবেষণাপত্রের মূল লেখক ড. রিচার্ড এল. ডটি বলেন, ‘আগের গবেষণাগুলোতে আক্কেল দাঁত তোলার পর শুধু স্বাদের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার দিকেই নজর দেয়া হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওইসব প্রতিক্রিয়া চলে যায় বলে এতদিন মনে করা হতো।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, আক্কেল দাঁত তোলার সময় থেকে শুরু করে ২০ বছর পর্যন্ত মুখের স্বাদ কিছুটা বাড়ে।’

আক্কেল দাঁত কেন প্রায়ক্ষেত্রে তুলে ফেলার প্রয়োজন পড়ে?

আক্কেল দাঁত সাধারণত ১৭ থেকে ২৭ বছর বয়সে ওঠে। বেশিরভাগ মানুষের ওপরের ও নিচের চোয়ালের সবচেয়ে পেছনে উভয় দিকে একটি করে মোট চারটি দাঁত ওঠে। এগুলো প্রভাবিত হলে, প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠার মতো পর্যাপ্ত জায়গা না পেলে চিকিৎসকরা সার্জারির মাধ্যমে তুলে ফেলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। মানুষের মুখগহবর যেহেতু আরো চারটি দাঁতের স্থান দেওয়ার তুলনায় ছোট, তাই এগুলো তুলে ফেলা দন্তচিকিৎসার সাধারণ প্রক্রিয়া।

আক্কেল দাঁতে ঠিকমতো ব্রাশ পৌঁছায় না, খাবারের কণা দাঁতে জমা হতে শুরু করে ও ব্যাকটেরিয়ার বিকাশ ঘটে। ফলে দাঁত ক্ষয়, সাইনাস টিস্যুতে ক্ষয়, মাড়ির সংক্রমণ ইত্যাদির ঝুঁকি বাড়ে। আক্কেল দাঁতে কোনো ধরনের সংক্রমণ হলে এটি অন্যান্য দাঁতকেও প্রভাবিত করে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।

মুখের স্বাদের ওপর আক্কেল দাঁত তোলার প্রভাব

নতুন গবেষণাপত্রের মূল লেখক ডটি এবং সহ-লেখক ডেন কিম ১ হাজার ২৫৫ মানুষের ওপর গবেষণা পরিচালনা করেছেন। ওইসব মানুষের ২০ বছরের কেমোসেনসরি ডেটা মূল্যায়ন করেছেন ডটি ও কিম। তাদের মধ্যে ৮৯১ জন তাদের আক্কেল দাঁত তুলেছিলেন। বাকি ৩৬৪ জন আক্কেল দাঁত তোলেননি।
গবেষণায় সুক্রোজ, সোডিয়াম ক্লোরাইড, সাইট্রিক অ্যাসিড ও ক্যাফেইনের আলাদা পাঁচটি ঘনত্ব অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১ হাজার ২৫৫ জনকে প্রতিটি দ্রবণ চুমুক দিয়ে কুলকুচি করে ফেলে দিতে বলা হয়। এরপর তাদের জিজ্ঞেস করা হয়, দ্রবণ খেতে মিষ্টি, টক, নাকি তেতো ছিল।

গবেষণায় দেখা যায়, আক্কেল দাঁত তোলা ব্যক্তিরা আক্কেল দাঁত না তোলাদের চেয়ে দ্রবণের স্বাদ ভালোভাবে শনাক্ত করতে পেরেছেন। আর এ ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীরা এগিয়ে।

আক্কেল দাঁত তোলার পর কেন স্বাদ বাড়ে এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান এটিকে কীভাবে ব্যাখা করে, তা জানার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন গবেষকরা। গবেষণাপত্রটি কেমিক্যাল সেন্সেস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

গাজীপুর কথা