ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কৃপণ কোটিপতি, খরচ বাঁচাতে বিড়ালের খাবারও খান!

প্রকাশিত: ২১:৫১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩

কৃপণ কোটিপতি, খরচ বাঁচাতে বিড়ালের খাবারও খান!

কৃপণ কোটিপতি, খরচ বাঁচাতে বিড়ালের খাবারও খান!

ধনসম্পত্তির নিরিখে পাল্লা দিতে পারেন অনেক কোটিপতিকে। কিন্তু ঐটুকুই। জীবনযাপন নিয়ে তিনি কারও সঙ্গে পাল্লা দিতে রাজি নন তিনি। নিজেই ঘোষণা করেছেন যে, দুনিয়ার সব থেকে কিপটে উদ্যোগপতি তিনি। নিতান্ত প্রয়োজন না হলে নতুন কিছু কেনেন না। টাকা বাঁচাতে বিড়ালের খাবারও খেয়ে নেন। সিনেমা নয়, বাস্তবেই রয়েছেন এমন শিল্পপতি। নাম এইমি এলিজাবেথ। এইমির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩৮ দশমিক ৭১ কোটি টাকা।

 

এইমি

 

আপনার কাছে যদি এই টাকা থাকে, কী করবেন? বিলাসবহুল জীবনযাপন করবেন। ঘুরবেন, বেড়াবেন। সেটাই তো স্বাভাবিক! এইমি এ সব পথে হাঁটেন না। তিনি গুনে গুনে খরচ করেন প্রত্যেকটি টাকা। এইমির বয়স ৫০। আমেরিকার লাস ভেগাসে থাকেন তিনি। মাসে সংসার চালানোর জন্য নিজের জন্য বরাদ্দ করেছেন এক হাজার ডলার। তার থেকে এক টাকাও বেশি খরচ করেন না এইমি। দরকার পড়লেও নয়। খরচ বাঁচানোর জন্য নানা কৌশল রয়েছে এইমির। বিদ্যুতের বিলেও সাশ্রয় করেন তিনি। যত ঠান্ডাই পড়ুক, পানি গরম করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের বেশি হিটার চালান না। দিনে মাত্র ২২ মিনিট চালান হিটার। তাতেই গরম হয়ে যায় গোসলের পানি। হিসাব করে দেখেছেন, দাবি এইমির।

একটি সাক্ষাৎকারে এইমি বলেন, ‘এমনিতে সারা দিন আমি পানির হিটার বন্ধ রাখি। গোসলের জন্য ২২ মিনিট চালালেই চলে। তাই রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে পানির হিটার চালাই। ২২ মিনিট সময় সেট করে দিই, যাতে এক টাকাও নষ্ট না হয়।’ এইমির দাবি, এতে মাসে ৮০ ডলার বেঁচে যায়। মাঝেমধ্যে সকালে উঠে হিটার চালাতে ভুলে যান বলেও জানিয়েছেন তিনি। সে সব দিন বরফ-ঠান্ডা পানিতে  গোসল সেরে নেন বলে জানিয়েছেন এইমি।

 

টাকা বাঁচাতে বিড়ালের খাবারও খেয়ে নেন

স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে এইমির। তারপর থেকে প্রাক্তন স্বামী মিশেলের দেওয়া বাড়িতেই থাকেন তিনি। সেই বাড়ি পরিষ্কার করে দিয়ে যান খোদ মিশেল। তাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার খরচও বেঁচে যায় এইমির। কেন প্রাক্তন স্ত্রীর বাড়িতে এসে সব পরিষ্কার করে দিয়ে যান মিশেল? এইমি জানিয়েছেন, এর ফলে মিশেলের শরীরচর্চা হয়ে যায়। তিনি রোগা থাকতে পারেন। টাকা বাঁচাতে এইমি পোষ্য বিড়ালের খাবারও খেয়ে নেন। বিড়ালের জন্য আনা ক্যানবন্দি টুনা বা চিকেনের ঝোল বানিয়ে খেয়ে নেন। কারণ বিড়ালের জন্য যে ক্যানবন্দি টুনা বা চিকেন পাওয়া যায়, তা ৩০ সেন্ট সস্তা। ভারতীয় মুদ্রায় দেড় টাকার মতো।

শুধু নিজে নন, বাড়িতে অতিথি এলে তাদেরও এই খাবারই দেন এইমি। তার কথায়, ‘লোকজন এ সব জানলে রেগে যাবে। তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। টাকা বাঁচলেই হলো।’ সবজি কাটার জন্য তার রান্নাঘরে একটাই ছুরি। একটার বেশি কেনেন না। বাসন মাজার স্পঞ্জ যত ক্ষণ না ছিঁড়ে যায়, তত ক্ষণ ব্যবহার করে যান। অতিথিরা এসে দেখে ঘেন্না পান। এইমি অবশ্য সে সব পাত্তা দেন না। কেন এভাবে টাকা বাঁচান এইমি? জবাব দিয়েছেন নিজেই। তিনি জানিয়েছেন, ছোট থেকে দারিদ্র দেখেছেন। কষ্টে মানুষ হয়েছেন। কৈশোরেই আশ্রয়হীন হয়েছেন। তাই আজ এক টাকাও বেশি খরচ করেন না।

 

সেই টাকা জমিয়েই ১৯৯১ থেকে ১৯৯২ সালে একটি নাইটক্লাব কেনেন তিনি

প্রথম জীবনে ঘরে রাখার গাছের ব্যবসা শুরু করেন এইমি। পাশাপাশি লোকজনের পোষ্যের দেখভালের কাজ করতেন তিনি। সে জন্য পারিশ্রমিক নিতেন। সেই টাকা জমিয়েই ১৯৯১ থেকে ১৯৯২ সালে একটি নাইটক্লাব কেনেন তিনি। একটি ফ্যাশন শোয়েরও মালিকানা ছিল তার নামে। ২০০১ সালে সব ব্যবসা বিক্রি করে দেন এইমি। বিনিয়োগ করেন রিয়েল এস্টেটে। সেখান থেকেও অবসর নিয়েছেন। এখন রিয়েল এস্টেট এবং কোন ব্যবসায় কতটা বিনিয়োগ করবেন, অর্থের বিনিময়ে সেই পরামর্শ দেন। বইও লেখেন। জো বাইডেন সরকারের সমালোচক এইমি। প্রায়ই সমাজমাধ্যমে সেই নিয়ে মুখ খোলেন। সমাজমাধ্যমে চাকরিজীবীদের হয়েও জোরালো সওয়াল করেন তিনি। অভিযোগ করেছেন, নতুন সরকারের আমলে চাপে আমেরিকার খেটে খাওয়া মানুষেরা।

সূত্র: আনন্দবাজার