ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

চলচ্চিত্রে বেড়েই চলেছে ‘বাকযুদ্ধ’

প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ১৪ আগস্ট ২০২২

চলচ্চিত্রে বেড়েই চলেছে ‘বাকযুদ্ধ’

চলচ্চিত্রে বেড়েই চলেছে ‘বাকযুদ্ধ’

বাংলা সিনেমায় আবারো সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। দেশের প্রেক্ষাগৃহে দর্শকেরা আসা শুরু করেছে। তাই ছবির পরিচালক-প্রযোজকরাও নড়েচড়ে বসেছেন, প্রত্যাশা করছেন ছবি ব্যবসার দিন আবারো ফিরতে শুরু করবে। এরই ভেতরে প্রতি সপ্তাহে ছবি রিলিজের সংখ্যাও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন অনেকেই। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে আশার আলো সঞ্চার হচ্ছে। তবে সিনেমার এই সাফল্যের মাঝে চলচ্চিত্র পাড়ায় চলছে বাকযুদ্ধ।

একে অপরের সম্পর্কে মন্তব্যের তীর ছুঁড়ে দেবার এই ইন্ডাস্ট্রিতে এখন অনেকটাই নিয়মিতই হচ্ছে। শিল্পী সমিতির নির্বাচন থেকে শুরু করে সর্বশেষ ‘আশির্বাদ’ সিনেমার প্রযোজক ও শিল্পীর পারস্পরিক বাকযুদ্ধটাই সর্বাধিক আলোচিত ও সমালোচিত হচ্ছে।

‘আশির্বাদ’ সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস নায়ক রোশান ও মাহির কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, তারা ‘আশীর্বাদ’ছবির পোস্টার ফেসবুকে শেয়ার দেয়নি। তাই তাদের প্রেস কনফারেন্সে বলা হয়নি। তাদের এমন আচরণে অখুশি হয়েছি। তারা কেন শেয়ার করেনি জানি না। নায়ক-নায়িকাদের আজকাল এতো চাহিদা যে প্রযোজক-পরিচালকরা হিমশিম খেয়ে যাই।

মাহিয়া মাহি ও রোশানের বিরুদ্ধে অপেশাদারিত্ব অভিযোগ করেছেন সিনেমাটির প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস। মাহি সিনেমাটির শুটিংয়ের সময়ে খারাপ আচরণ করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস। সিনেমাটির স্বার্থে এতদিন সব মুখ বুঝে সহ্য করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন প্রযোজক। এ সময় সিনেমাটির প্রযোজক জেনিফার, পরিচালক মানিক, ঝন্টুসহ অন্যান্য শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন। তবে হাজির ছিলেন না মাহি-রোশান। সিনেমাটির নায়ক-নায়িকা উপস্থিত না থাকার কারণ জানতে চান সাংবাদিকরা। তখনই তিনি এসব কথা বলেন।

শুটিংয়ের সময়ে খারাপ আচরণ করেছেন মাহি, তা উল্লেখ করে জেনিফার বলেন, করোনার সময়ে শুটিং করা কতটা কঠিন ছিল তা আপনারাই জানেন। ওই সময়ে অনেক কলাকুশলীর অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় ছিল। ওই সময়ে শুটিং করছিলাম। আমার সহকারী হিসেবে একটি ছেলে ছিল। কিন্তু মাহির কারণে ওই ছেলেকে শুটিং থেকে বাদ দিতে হয়। পরে কাঁদতে কাঁদতে সেট থেকে বেরিয়ে যায় ছেলেটি। 

শুটিং বয়কে বাদ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে জেনিফার বলেন, আমার সিনেমার নায়িকা সম্ভবত নারকেল তেল চেয়েছিল। ওই সময়ে ছেলেটি আমার মাথায় ছাতা ধরেছিল। যার কারণে নায়িকাকে তেল দিতে দেরি হয়। এতে মাহি বেঁকে বসে। ওই ছেলেকে বাদ না দিলে মাহি শুটিং করবে না বলে জানায়। পরে বাধ্য হয়ে ছেলেটিকে বাদ দিই।

তিনি আরো বলেন, সিনেমার শুটিং শেষ করাটা জরুরি ছিল; এজন্য যারা সেটে উল্টাপাল্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো স্টেপ নিতে পারিনি। বরং সিনেমার স্বার্থে সবকিছু মেনে নিয়েছি। কাউকে নালিশ করিনি; এখনো নালিশ করছি না। আপনারা প্রসঙ্গটি সামনে আনার কারণে কথাগুলো বলছি।

এ সময় পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু বলেন, নায়িকাকে ঘাড় ধরে বের করে দিতাম। প্রোডাকশন বয়কে না সরালে শট দিবে না, এতই সোজা! আমার মনে হয়, প্রোডাকশন বয় আর নায়িকা তার অবস্থান সমান মনে করে।

প্রযোজক জেনিফারের বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ তুললেন মাহিয়া মাহি। তার দাবি, সিনেমার মুক্তির বিষয়ে তাকে কোনো তথ্যই জানানো হয়নি। একটা সিনেমা শুধু প্রযোজকের একার না। এটা আমাদেরও। ‘আশীর্বাদ’ সরকারি অনুদানের সিনেমা। তাই আমরা শিল্পীরা অনেক কম পারিশ্রমিক নিয়েছি। কিন্তু সেই তুলনায় সম্মান পাইনি। সিনেমাটি ঘিরে তার অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু প্রযোজকের অপেশাদার আচরণের কারণে সব স্বপ্ন নষ্ট হয়ে গেছে। আক্ষেপ করে মাহি বললেন, একটি সিনেমা আমার সন্তানের মতো, অথচ আমার চোখের সামনে সেই সন্তানটি মারা যাচ্ছে; বিষয়টি আমাদেরও তো খারাপ লাগে।

প্রযোজকের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে চুপ নেই চিত্রনায়ক রোশান। সেও প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌসসহ বয়োজ্যেষ্ঠ নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টুকে নিয়েও বললেন। রোশান বলেন, তাদের কাছে এটা আশা করিনি। ঝন্টু সাহেবকে সম্মান দিয়েই বলছি, উনি আসলে কাউকে স্নেহ করতে জানেন না। তার কথাগুলো আমাকে মর্মাহত করেছে। প্রত্যেক ছবি মুক্তির আগে একটি টিম প্রচারণার কাজে থাকে। নানা পরিকল্পনা করে থাকে। কিন্তু ‘আশীর্বাদ’-এ তেমনটা নেই। এখানে প্রযোজক (জেনিফার ফেরদৌস) নিজের ইচ্ছা মতো সবকিছু করছেন। পোস্টার যেটি বানানো হয়েছে সেটি আমার পছন্দ হয়নি। আলোচনা ছাড়াই প্রযোজক নিজের পছন্দ মতো তৈরি করেছেন। এমন মানহীন পোস্টারে আমার ভক্তরা ক্ষুব্ধ হয়েছে। আমার নিজেরও পছন্দ হয়নি। সে কারণে ফেসবুকে পোস্টারটি শেয়ার করেননি।

রোশান আরো বলেন, প্রযোজক নিজেই হাইলাইট হওয়ার জন্য এসব করছে। সবচেয়ে অবাক হয়েছি উনি সংবাদ সম্মেলনে আমাকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন যা পুরোপুরি অযৌক্তিক। শুটিংয়ের সময় অভিযোগ তোলে, আমি নাকি ডিরেক্টরকে কর্তৃত্ব দেখিয়েছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো পরিচালক যদি এটা বলতে পারে আমি সিনেমা ছেড়ে দেব। বরং প্রযোজক (জেনিফার) কর্তৃত্ব খাটিয়েছেন। পুরো শুটিংয়ে আমাদের সবাইকে একাধিকবার বিপাকে ফেলেছেন। ঠিকভাবে মনোযোগ দিতে পারিনি। অনেক জায়গায় ছবির মানে ছাড় দিয়েছে। শুটিং ইউনিটে খাবারের সমস্যা হওয়ার কথা না। অথচ উনি খাবারের সমস্যা করলেন। খাবার পানি পর্যন্ত নিজের ঘরে তালাবন্ধ করে রাখতেন। 

আমাদের খাবারের ও পানির সমস্যায় পড়তে হয়েছে অনেকবার। শুটিং হলেই উনি এসে সেলফি তুলে ফেসবুকে আপলোড দেন। এভাবে প্রতি দৃশ্য যদি ফেসবুকে দেওয়া হয় তাহলে কীভাবে শুটিং করবো? এসব বিরক্তির মাঝেও উনার আবদার আমরা যে ছবি ফেসবুকে আপলোড দিবো সেটাতেও যেন প্রযোজক জেনিফারকে থাকতে হবে; এটা কেমন আচরণ? তারপরেও ভেবেছিলাম প্রচারে অংশ নেব। কিন্তু সংবাদ সম্মেলন করে প্রচুর মিথ্যা কথা বললেন। ট্রেলার দেখার অপেক্ষায় আছি।

রোশান বলেন, যেভাবে করার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। ৬০ লাখ টাকা বাজেট পেয়ে এই বাজেটে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট আরো সুন্দর করে বানানো যেত। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে সম্পূর্ণ টাকা ছবিতে খরচ হয়নি। কোয়ালিটি যেন ছাড় না দেয় তাই আমি চুক্তির চেয়েও পারিশ্রমিক কম নিয়েছি। বলেছি, আমার প্রাপ্য টাকা সিনেমাতে দিন। তবুও কাজটা ভালো করেন। কিন্তু প্রযোজক করেনি। আমি ভীষণ আশাহত হয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, উনি প্রযোজক হিসেবে মোটেও পেশাদার নন। তার আরো জানা বোঝা উচিত। কীভাবে কোথায় যুক্তিগত কথাবার্তা বলতে হয় সেটাও শেখা উচিত। যাদের সঙ্গে কাজ করেছি তারা জানে রোশান কেমন। উনি আমাকে অসম্মান করতে গিয়ে নিজের সম্মান নষ্ট করছে।

কথার যুদ্ধ এবারই নতুন নয়। এটা মূলত শুরু হয়েছে গেল ঈদে সিনেমা মুক্তির বিষয় নিয়ে চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল ও নির্মাতা অনন্য মামুনের মধ্য দিয়ে। অনন্য মামুন যেমন অনন্তের সিনেমার সমালোচনা করেছেন, অনন্ত আবার কড়া জবাব দিয়েছেন। এমনকি মামুনকে সামনে পেলে কান ধরিয়ে উঠবস করাবেন বলেও মন্তব্য করেছেন। এ নিয়ে সিনে পাড়ায় আলোচনা-সমালোচনাও কম হয়নি।

এই ঈদে অনন্ত জলিলের ‘দিন: দ্য ডে’ সিনেমাটির বাজেট ১০০ কোটি টাকার বেশি। অনন্য মামুনের দাবি, অনন্তের ১০০ কোটির গল্প কেবল ‘স্ট্যানবাজি’! এই মন্তব্যের পরই একটি টিভি অনুষ্ঠানে ক্ষুব্ধ হন জলিল। তিনি জানান, অনন্য মামুনকে পরিচালক বানিয়েছেন তিনিই। তাকে নিয়ে সমালোচনা করার কোনো যোগ্যতাই মামুনের নেই।

অনন্ত জলিলের বক্তব্যের বিস্তারিত জবাবে ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্টে অনন্য মামুন জানিয়েছেন, কী কারণে তার সঙ্গে অনন্ত জলিলের ঝামেলার সূত্রপাত হয়।

বলিউড অভিনেত্রী স্নেহাকে ঘিরে তৈরি হওয়া সমস্যা গড়ায় গালাগালির পর্যায়েও। অনন্য মামুন জানান, তার বাবা-মাকে নিয়ে গালি দিয়েছিলেন অনন্ত জলিল। এ কারণে তিনি জলিলের সঙ্গ ছেড়ে আসেন।

গালি প্রসঙ্গে মামুন লিখেছেন, ‘মোস্ট ওয়েলকাম-২’ সিনেমার দেশের বাইরের সব শুটিং আমি পরিচালনা করেছি। নাজিম শাহরিয়ার জয়, মিশা ভাই, ডন ভাই উনারা ব্যাপারটা ভালো করেই জানেন। দেশে আসার পর যখন কথায় কথায় একদিন অনন্ত ভাই আমার বাবা-মাকে জড়িয়ে একটা গালি দেন, ওই দিন চলে এসেছি। আপনার পাশের লোকজন টাকার জন্য আপনাকে হুজুর হুজুর করতে পারে, আমি না।

‘দিন:দ্য ডে’ সিনেমা দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকাই সিনেমার নায়িকাদের এক হাত নিয়েছিলেন চিত্রনায়িকা বর্ষা। বর্ষা বলেন, কী টাইপের নায়িকা আপনাদের পছন্দ? সেই নায়িকা পছন্দ- যারা পেটে সন্তান নিয়ে কিংবা সন্তান প্রসব করে হাইডে (আড়ালে) থাকে? নাকি যারা হিরোইন, ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা নিয়ে ধরা পড়ে পুলিশের হেফাজতে থাকে? যেসব নায়িকা বিয়ের শাড়িটাও স্পন্সর নিয়ে পরে তাদের পছন্দ? তাদেরকে অনন্ত জলিলের সঙ্গে মানাবে? আমি সেই গ্রেডের নায়িকা না। আমি আমার জায়গায় আছি।
  
তবে এর বাইরে কুট-তর্ক আর পারস্পরিক বিভেদটাও কম নেই। সম্প্রতি জাগো এফ এম এর ‘রাতাড্ডা’ লাইভ শোতে চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী সিনিয়র সহকর্মী মিশা সওদাগরকে নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, উনি যখন পরাণ ছবি দেখতে যান তখন সেই ছবির নায়ককে বলেন সেরা নায়ক। আবার হাওয়া ছবি দেখতে গিয়ে তার নায়ককে সেরা বলেছেন। অথচ আমাকেও তিনি শাকিব খানের পরে দ্বিতীয় সেরা নায়ক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

মূলত বাপ্পী চৌধুরীর এই মন্তব্যের পরপরই ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান ধরণের মন্তব্যের ঝড় ওঠে। অনেকে বাড়তি কথা যোগ করে দুজনের ভেতরেই দ্বন্দ্ব’র আভাস দেন।

অন্যদিকে এ ধরণের মতামতের প্রতিউত্তরে মিশা সওদাগর বলেন, আমি আমার জুনিয়র কলিগদের উত্সাহ দিয়েছি। এবং সবসময়ই তা দিয়ে থাকি। এখন একজন সিনিয়রের কথার পরে তা নিয়ে জুনিয়র আর্টিস্টরা কিভাবে মন্তব্য করবে সেটা তো বাপ্পীর একটু শেখা উচিত। একেই তো বলে শিষ্টাচার। এখন এই শিষ্টাচারের বাইরে গিয়ে কথা বললে মুরুব্বি হিসেবে আমাদের লজ্জা পেতে হয়। কারণ দেখুন, ঠিক সময়ে বিয়ে করলে আমার হয়তো বাপ্পীর বয়সী একটা ছেলেও থাকতো। তাই ও আমার সন্তান তুল্য। ওকে আমি সেভাবে আদর স্নেহ করি। আর ওর এসব দিকে নজর না দিয়ে আমি মনে করি অভিনয়ের দিকে নজর দেয়া উচিত। বাপ্পীকে এখনো অন্যকে দিয়ে ডাবিং করাতে হয়। এটা দুঃখজনক। ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে আমি মনে করি বাপ্পীর এসব আচরণের চেয়েও উচিত কিভাবে ওর নিজের অভিনয়ের পারদর্শিতা অর্জন করবে।

এদিকে একাধিক নেটিজানদের ভেতরে ট্রল হবার পর বাপ্পী চৌধুরী বলেন, বিষয়টি মূলত তিল থেকে তাল বানানো হচ্ছে। একটা আড্ডায় নানান ধরণের কথাই ওঠে। সেই হিসেবেই কথাগুলো বলেছি। এটাকে এভাবে নেবার কোনো কারণ নাই।

কিছুদিন আগে খল-অভিনেতা মিশা সওদাগর এক সাক্ষাৎকারে এসে বলেন, অনন্ত জলিলের ‘দিন: দ্য ডে’ দিয়ে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির কোনো লাভ নেই। এছাড়া সিনেমাটিতে ‘প্রফেশনাল কোনো শিল্পী নেই’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ‘দিন: দ্য ডে’ সিনেমা দেশের চলচ্চিত্রের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না বলে মন্তব্য করার বেশ কিছুদিন চলে গেলেও অনন্ত ছিলেন নীরব। এবার সরব হলেন। শনিবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এক হাত নিলেন এই অভিনেতাকে।

মিশা সওদাগরের বক্তব্য নিয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় অনন্ত বলেন, মিশা সওদাগর সাহেব একজন পুরনো শিল্পী, তিনি যেটা ভেবেছেন সেটা বলেছেন। ইন্ডাস্ট্রির তো উনার দ্বারা কোনো উপকার হয়নি। উনি একজন প্রযোজকও না, ক্রিয়েটিভ পার্সনও না; উনি একজন শিল্পী। তার দ্বারা তো আর সিনেমার উন্নতি হয় না। ভোটের জন্য তারা ২০০ জনের বেশি শিল্পীদের বঞ্চিত করেছিল। নিউজে সবসময় জায়েদ খানের নাম বলতে দেখেছি, মিশার নাম কম এসেছে। কিন্তু মিশা তো সভাপতি ছিলেন, শিল্পীদের বাদ দেওয়ার সই তো তিনিই করেছেন। চলচ্চিত্রের যোদ্ধাদের এফডিসি থেকে বের করে দেওয়া হলো, পরে ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই তাদের ফিরিয়ে আনলেন। তাহলে মিশার দ্বারা চলচ্চিত্রের উন্নয়ন কীভাবে হলো? মিশা সওদাগর যেসব কথা বলেছেন, তা আপত্তিকর; এগুলো তার মুখে মানায় না। তার এতটুকু যোগ্যতা নাই এসব কথা বলার। তার যোগ্যতা কী? শুধুমাত্র খল অভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করে গেছেন। কোনো বিনিয়োগ করেননি। চলচ্চিত্রের জন্য ভালো কিছু করেননি। চলচ্চিত্রের যোদ্ধাদের বের করে দিয়েছেন। আমরা ৮ বছর না থেকেও এফডিসির সব অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ছি, অর্থ দিয়ে পাশে থেকেছি। শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছি অর্থ-চিকিৎসা দিয়ে। উনি কী করেছেন?

এরকম করে চললে পরস্পরের প্রতি এই বিরুপ মন্তব্যের কারণে চলচ্চিত্রের পরিবেশ আরো অস্থিতিশীল ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার জায়গা হারাবে বলে অনেকেই মনে করেন। তাই সকলে চান এই সকল দ্বন্দ্ব অভিমান আর পারস্পরিক বাকযুদ্ধেও অবসান হোক।