ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ঈদের পর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৫:০১, ৯ জুলাই ২০২১

ঈদের পর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত

এ বছর আটকে থাকা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বিকল্প পদ্ধতি খুঁজতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই কমিটির একাধিক প্রস্তাব যাচাই বাছাই পর্যায়ে রয়েছে। ফলে এখনই এ বিষয়ে চ‚ড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আদৌ পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে বিকল্প পদ্ধতি কী হবে তা ঈদুল আজহার পর সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬০ দিনে এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ৮৪ দিনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে পরীক্ষা নেয়া প্রায় অসম্ভব বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিকল্প কী হতে পারে তা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি কাজ করছে। সেটি চ‚ড়ান্ত হলে শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরবেন। চলতি মাসের শেষ দিকে শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হবে।

কমিটি যে দুটি প্রস্তাব দিয়েছে তার মধ্যে প্রথমটি হলো- রচনামূলক বা সৃজনশীল প্রশ্ন বাদ দিয়ে কেবল বহু নির্বাচনী প্রশ্নে (এমসিকিউ) পরীক্ষা নেয়া। দ্বিতীয়টি হলো- বিষয় ও পূর্ণমান (পরীক্ষার মোট নম্বর) কমিয়ে পরীক্ষা নেয়া। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের দুইপত্র একীভ‚ত করে ২০০ নম্বরের বদলে ১০০ নম্বরে পরীক্ষা নেয়া হবে।

কিন্তু উভয়ক্ষেত্রেই করোনা পরিস্থিতির উন্নতি জরুরি। অর্থাৎ সংক্রমণ ১০ শতাংশের নিচে নেমে এলে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেয়া হবে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ করা হবে কেন্দ্রের সংখ্যা। এমনটি সম্ভব না হলে এসএসসির ক্ষেত্রে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফলের ৫০ শতাংশ এবং অ্যাসাইনমেন্ট ও ক্লাস অ্যাকটিভিটিসের ওপর ৫০ শতাংশ ফলাফল নিয়ে ফল প্রস্তুত করা হতে পারে। এইচএসসির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর এসএসসির ফলের ৫০ শতাংশ, জেএসসির ২৫ শতাংশ এবং অ্যাসাইনমেন্টের ফলের ২৫ শতাংশ সমন্বয় করে ফল দেয়া হতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পরীক্ষা না হলে শিক্ষার্থীদের কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে তা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়নে নম্বর বিভাজন নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি শিক্ষা প্রশাসন। এদিকে৫ কয়েকটি গণমাধ্যম এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নে নম্বর বিভাজন কীভাবে হবে সে তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। তবে শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়নে নম্বর বিভাজন নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় উপকমিটির সভাপতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নম্বর বিভাজন নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধন্ত হয়নি। আমরা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করব। যদি পরীক্ষা না নেয়া যায় তাহলে বিকল্প চিন্তাভাবনা করা হবে। তবে, শিক্ষার্থীদের নম্বর বিভাজন নিয়ে আমরা এখনো ভাবছি না। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

কিছু কিছু টিভি চ্যানেল বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের আগের পাবলিক পরীক্ষা ও অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে জানালে বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, এ বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনাই করিনি। পরীক্ষা না নেয়া হলে কী কী সূচকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে সে বিষয়টিও নির্ধারণ হয়নি। তবে, পরীক্ষা না নেয়া হলে অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের একটি সূচক হতে পারে। বিভ্রান্তিকর তথ্য দেখে উদ্বিগ্ন না হতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতিতে ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। গত বছরের এইচএসসি, জেএসসি ও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েও শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

গাজীপুর কথা