ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

মূল্যস্ফীতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে ব্রিটিশ-মার্কিন পরিবারগুলো

প্রকাশিত: ১০:১৬, ১৯ জুন ২০২২

মূল্যস্ফীতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে ব্রিটিশ-মার্কিন পরিবারগুলো

ছবি: সংগৃহীত

মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মার্কিন ও ব্রিটিশ পরিবারগুলোকে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে গিয়ে তারা সস্তা পণ্য খুঁজছেন। পাশাপাশি জ্বালানি খরচ বাঁচাতে গাড়িতে চড়াও কমিয়ে দিয়েছেন তারা। গত কয়েক দশকের মধ্যে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হয়েছে দেশ দুটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বদলে যাচ্ছে ব্রিটিশ ও আমেরিকানদের শপিংয়ের অভ্যাস। কেনাকাটার লিস্ট কাটছাঁট করার পাশাপাশি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর কিংবা সুপার শপে যাওয়াটাও অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন তারা।

ব্রিটেনের সুপার মার্কেট জায়ান্ট টেসকোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্রিটিশ নাগরিকরা এখন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে গিয়ে সস্তা পণ্য খুঁজছেন। তাছাড়া কেনাকাটার পরিমাণও আগের থেকে অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন তারা। বেশি দামি ব্রান্ডের পণ্যের থেকে তারা খুঁজছেন সস্তা পণ্য। এমনকি কাটছাঁট করছেন মাংস ও মাছের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের বাজেটও।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাজারের তালিকা থেকে বেশি দামের মাছ ও মাংস কেনা বাদ দিচ্ছেন ক্রেতারা। পাশাপাশি জ্বালানি খরচ কমাতে গাড়িতে চড়া অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন। বাতিল করছেন বিভিন্ন টেলিভিশন ও বিনোদন প্ল্যাটফর্মের সাবস্ক্রিপশনও। নতুন গৃহস্থালি পণ্য কেনার বদলে পুরনো পণ্যই সারিয়ে নিচ্ছেন।

মূল্যস্ফীতির কারণে ব্রিটেনের বাজার পরিস্থিতি বর্তমানে খুবই প্রতিকূল বলে উল্লেখ করেন টেসকোর প্রধান নির্বাহী কেন মারফি। তিনি বলেন, ক্রেতাদের হাতে থাকা ঝুড়ির আকৃতি দিন দিন ক্ষুদ্র হচ্ছে। পাশাপাশি ক্রেতারা সস্তা পণ্যের দিকে ঝুঁকছেন।

সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ব্রিটেনের ভোক্তা মূল্যসূচক ৯ শতাংশেরও বেশি। মূল্যস্ফীতির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে খাদ্যের দামে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

টেসকো ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাজ্যের খুচরা পণ্যের বাজারের ২৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিষ্ঠানটি।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যেই সুদের হার বাড়িয়েছে ব্রিটেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। ব্রিটেনের মতো একই অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রেও। সেখানেও বাড়তি মূল্যস্ফীতি ক্রেতাদের কেনাকাটার অভ্যাসে প্রভাব ফেলছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর চেন ক্রোগার জানিয়েছে, ক্রেতারা এখন আগের থেকে কম পণ্য কিনছে। পাশাপাশি নামিদামী ব্রান্ডের পণ্য বাদ দিয়ে অধিকতর সস্তা পণ্যের দিকে ঝুঁকছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বর্তমানে গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটিতে গত মে মাসে ভোক্তা মূল্যসূচক এ ৮ দশমিক ৬ শতাংশ অতিক্রম করে। ব্রিটেনের মতো যুক্তরাজ্যেও মূল্যস্ফীতির প্রভাব সবচেয়ে বেশি খাদ্যপণ্যের দামে পড়েছে। দেশটিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অতিক্রম করেছে। যা ১৯৭৯ সালের পর সর্বোচ্চ। দেশটিতে ডিমের দাম ৩২ শতাংশ, দুধের দাম ১৬ শতাংশ এবং মুরগির মাংসের দাম বেড়েছে ১৬ শতাংশ।

মুডিস অ্যানালিটিকসের গবেষণা অনুযায়ী, বর্তমান একটি মার্কিনি পরিবারকে আগের বছরের থেকে গড়ে প্রতি মাসে সংসারের খরচ মেটাতে ৪৬০ ডলার অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে।

ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, যে ক্রেতারা আগে দুধ কিনত গ্যালন হিসাবে তারা এখন কিনছেন হাফ গ্যালন।

পাশাপাশি যানবাহনের ব্যবহৃত জ্বালানির দাম প্রতি গ্যালন ৫ ডলারের ওপরে উঠে যাওয়ায় মার্কিনিরা গাড়িতে করে ঘোরাফেরা কমিয়ে দিচ্ছেন। তেলের খরচ বাঁচাতে গাড়ি নিয়ে বেশি দূরে যাওয়ার বদলে নিকটস্থ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরেই কেনাকাটা সারছেন তারা।

আরো পড়ুন