ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

২০ হাজার কোটি টাকার পাম-সয়াবিন তেল আমদানি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৭ মে ২০২২

২০ হাজার কোটি টাকার পাম-সয়াবিন তেল আমদানি

বিশ্ববাজারে পাম ও সয়াবিন তেলের দাম এখনকার মতো কখনো হয়নি। দেশে এই দুই ধরনের তেলের চাহিদা পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার সয়াবিন ও পাম তেল আমদানিতে খরচ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। আগে কখনো ভোজ্যতেল আমদানিতে এত অর্থ খরচ করতে হয়নি। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় চাপ বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, চলতি ২০২১–২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে পাম ও সয়াবিন তেল আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ২২৮ কোটি ডলার বা প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছর (২০২০-২১) একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১৪৭ কোটি ডলার বা ১২ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই দুটি তেল আমদানিতে ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৫৫ শতাংশ।

ব্যবসায়ীরা নতুন করে যেসব ঋণপত্র খুলেছেন, সেসব পাম ও সয়াবিন তেলের দর আগের তুলনায় বেশি। তাতে অর্থবছরের শেষ দুই মাসে এই ব্যয় আরও বাড়বে। সব মিলিয়ে বর্তমান ধারায় আমদানি অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে এ দুই ধরনের তেলের আমদানি ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে ২৭৩ কোটি ডলার। তাতে গত বছরের তুলনায় প্রায় শতকোটি ডলার বাড়তি ব্যয় হবে ভোজ্যতেল আমদানিতে।

বিশ্ববাজারে এক বছরের ব্যবধানে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম কীভাবে বেড়েছে, তার উদাহরণ দেওয়া যাক। গত ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে টনপ্রতি সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে ৮৫৪ ডলার দরে। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে টনপ্রতি সেই ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে গড়ে ১ হাজার ৩৭৯ ডলারে। একইভাবে গত অর্থবছরে পাম তেলের গড় আমদানিমূল্য ছিল টনপ্রতি ৭৯৩ ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে টনপ্রতি ১ হাজার ২০৫ ডলার।

টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আথহার তাসলিম বলেন, বন্দর থেকে চলতি মাসে খালাস হওয়া সয়াবিন তেলের গড় আমদানি মূল্য পড়েছে ১ হাজার ৮৭৬ ডলার। যেসব ঋণপত্র খোলা হচ্ছে, তা ১ হাজার ৯৫০ থেকে দুই হাজার ডলারে। ইন্দোনেশিয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কিছুটা কমতে পারে।

পাম তেলের সিংহভাগ আরবিডি (পরিশোধিত, হালকা ও গন্ধযুক্ত) আকারে আমদানি হয়। সয়াবিন আমদানি হয় অপরিশোধিত আকারে। দুটোই দেশীয় কারখানাগুলোতে পরিশোধন করা হয়। এ ছাড়া আমদানি করা সয়াবিন বীজ ভেঙে তেল উৎপাদন করা হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে সয়াবিন বীজ আমদানিও শতকোটি ডলার ছাড়িয়েছে। সয়াবিন বীজ থেকে বছরে তিন লাখ টনের কম-বেশি সয়াবিন উৎপাদন হয়।

দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদার ৯৫ শতাংশই আমদানিনির্ভর। সরাসরি আমদানি ও বীজ আমদানি করে এ চাহিদা পূরণ করা হয়। এ ছাড়া দেশে শর্ষেবীজ থেকে শর্ষে তেল উৎপাদিত হয়। তবে চাহিদার তুলনায় শর্ষেবীজের উৎপাদন কম। সে জন্য প্রতিবছর শর্ষের বীজও আমদানি করতে হয়। বিশ্ববাজারে এক বছরের ব্যবধানে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম কীভাবে বেড়েছে, তার উদাহরণ দেওয়া যাক। গত ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে টনপ্রতি সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে ৮৫৪ ডলার দরে। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে টনপ্রতি সেই ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে গড়ে ১ হাজার ৩৭৯ ডলারে। একইভাবে গত অর্থবছরে পাম তেলের গড় আমদানিমূল্য ছিল টনপ্রতি ৭৯৩ ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে টনপ্রতি ১ হাজার ২০৫ ডলার।

টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আথহার তাসলিম বলেন, বন্দর থেকে চলতি মাসে খালাস হওয়া সয়াবিন তেলের গড় আমদানি মূল্য পড়েছে ১ হাজার ৮৭৬ ডলার। যেসব ঋণপত্র খোলা হচ্ছে, তা ১ হাজার ৯৫০ থেকে দুই হাজার ডলারে। ইন্দোনেশিয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কিছুটা কমতে পারে।

পাম তেলের সিংহভাগ আরবিডি (পরিশোধিত, হালকা ও গন্ধযুক্ত) আকারে আমদানি হয়। সয়াবিন আমদানি হয় অপরিশোধিত আকারে। দুটোই দেশীয় কারখানাগুলোতে পরিশোধন করা হয়। এ ছাড়া আমদানি করা সয়াবিন বীজ ভেঙে তেল উৎপাদন করা হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে সয়াবিন বীজ আমদানিও শতকোটি ডলার ছাড়িয়েছে। সয়াবিন বীজ থেকে বছরে তিন লাখ টনের কম-বেশি সয়াবিন উৎপাদন হয়।

দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদার ৯৫ শতাংশই আমদানিনির্ভর। সরাসরি আমদানি ও বীজ আমদানি করে এ চাহিদা পূরণ করা হয়। এ ছাড়া দেশে শর্ষেবীজ থেকে শর্ষে তেল উৎপাদিত হয়। তবে চাহিদার তুলনায় শর্ষেবীজের উৎপাদন কম। সে জন্য প্রতিবছর শর্ষের বীজও আমদানি করতে হয়।

ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয় গত বছর থেকে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায় বিশ্বাবাজারে। মার্চের শেষ এবং এপ্রিলের শুরুতে দাম কমে যুদ্ধের প্রায় আগের অবস্থার কাছাকাছি ফিরেও আসে। তবে এই ধারা বেশি দিন থাকেনি। এপ্রিলের শেষে বিশ্বের শীর্ষ পাম তেল উৎপাদক ও রপ্তানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বিশ্ববাজারে পাম ও সয়াবিনের দামের আগের সব রেকর্ড ভেঙে যায়।

ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় গত ৫ মে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়, ৭ মে থেকে নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী, বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা এবং খোলা পাম তেল প্রতি লিটার ১৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পরিশোধন ও উৎপাদন শেষে গড়ে প্রতি মাসে ৮৬ হাজার টন সয়াবিন তেল বাজারজাত করেছে কোম্পানিগুলো।এ ছাড়া পাম তেল বাজারজাত করেছে গড়ে মাসে এক লাখ টন করে।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন