নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় নারী ও তার দুই সন্তানের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী গিয়াস উদ্দিন শেখকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আটকের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যার কথা পর গিয়াস উদ্দিন স্বীকার করেছেন দাবি করেছে পিবিআই।
আজ রোববার বিকেল ৪টার দিকে পিবিআইয়ের জেলা পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, ‘আটকের পর গিয়াস উদ্দিন শেখ জিজ্ঞাসাবাদে মৌখিকভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি সেই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন। ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের উপর্যুপরি পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। আমরা এখন তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও ব্যাটসহ অন্য আলামত সংগ্রহের চেষ্টা করছি। পরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।’
এর আগে আজ বেলা ১১টার দিকে উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের বাড়ি থেকে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলো উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন শেখের স্ত্রী রাহিমা বেগম এবং তাদের সন্তান রাব্বি শেখ (১৩) ও রাকিবা শেখ (৭)। রাহিমা বেগম এলাকায় কাপড় সেলাইয়ের দরজি হিসেবে পরিচিত। রাব্বি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্র ও রাকিবা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত।
স্থানীয়রা জানায়, গিয়াস উদ্দিন শেখ গাজীপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টেন্ডারের মাধ্যমে রঙের কাজ করেন। তিনি বেশির ভাগ সময় গাজীপুরে অববস্থান করেন। আর দুই সন্তানকে নিয়ে রাহিমা বেগম গ্রামের ওই বাড়িতে থাকতেন। গতকাল বিকেলে গিয়াস উদ্দিন গাজীপুরের কর্মস্থলে যান। স্ত্রী ও দুই সন্তানের লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে তিনি আজ সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর থেকে বাড়িতে আসেন।
স্থানীয় লোকজন আরও জানায়, আজ সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় এক নারী তৈরি করেত দেওয়া পোশাক আনতে রাহিমা বেগমের বাড়িতে যান। বাইরে থেকে দরজা আটকানো দেখে বেশ কয়েকবার নাম ধরে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু আশপাশ থেকে কারও কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে কৌতূহলবশত দরজার নিচ দিয়ে ঘরের ভেতরে তাকান তিনি। এ সময় রক্ত দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। তখন স্থানীয় লোকজন ও প্রতিবেশীরা এসে ওই ঘরের একটি জানালা ভেঙে ঘরের ভেতর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর বেলাব থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান ঘটনাস্থলে আসার পর লাশ উদ্ধারের কাজ শুরু হয়। এ সময় দুই ঘরের দরজা খুলে নিহত তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
গাজীপুর কথা