ঢাকা,  শুক্রবার  ২৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ঘোড়ার গাড়িতে গাইবান্ধার চরাঞ্চলে ‘যোগাযোগ বিপ্লব’

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ঘোড়ার গাড়িতে গাইবান্ধার চরাঞ্চলে ‘যোগাযোগ বিপ্লব’

ঘোড়ার গাড়ি

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ঘোড়ার গাড়ি। কেননা বর্ষা মৌসুমে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। আর শুকনো মৌসুমে একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি। যাতায়াত ও কৃষিপণ্য সরবরাহে ঘোড়ার গাড়ির ব্যবহারও দিন দিন বেড়েছে। এতে সহজ হয়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা। অন্যদিকে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতা এসেছে শতাধিক পরিবারে।

তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদী দিয়ে বিচ্ছিন্ন গাইবান্ধার ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও সদর উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়ন। পানি না থাকায় চরাঞ্চলের এসব এলাকা এখন ধু-ধু মরুভুমির মতো বালুচর। এসব দূর্গম চরাঞ্চলে নেই চলাচলের রাস্তাঘাট। মাইলের পর মাইল বালু পথে হেঁটে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত ও তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য নিজের ঘাড়ে কষ্ট করে আনা-নেয়া করতে হতো।

স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি ঘোড়ার গাড়ি বদলে দিয়েছে চরাঞ্চলবাসীর চিরচেনা সেই দুভোর্গ। ধু-ধু বালু চরে সারি সারি ঘোড়ার গাড়ি চলছে চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়। নৌকার আদলে দু’পাড়ের মানুষ পাড়ি দিচ্ছে ঘোড়ার গাড়িতে। আগে চর থেকে বাঁশের খাটলিতে করে অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসার জন্য নৌঘাটে নিয়ে আসতে হলেও, এখন অল্প সময়ে ও স্বাছন্দে আনতে পারছেন ঘোড়ার গাড়িতে।

কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল জমি থেকে তুলে বাড়ি ও উপজেলা সদরসহ হাট-বাজারে বিক্রি করার জন্য নদীর ঘাটে নিয়ে আসছেন ঘোড়ার গাড়িতে করে। ফলে জেলার শস্য ভান্ডারখ্যাত এসব চরের উৎপাদিত ব্যাপক কৃষিপণ্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রেও ঘোড়ার গাড়ি পরিবহনে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

আবদুর রহমান নামে এক কৃষক জানান, আগে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নেয়াই যেত না। একে অনেক ফসল নষ্ট হতো। এখন ঘোড়ার গাড়ির ব্যবহার বাড়ায় সহজেই কৃষিপণ্য বাজারে নেয়া যায়।

এদিকে যোগাযোগে ঘোড়ার গাড়ির ব্যবহার জনপ্রিয়তা পাওয়ায় এসব ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। একজন ঘোড়া চালক প্রতিদিন আয় করছেন কমপক্ষে ৫০০-৭০০ টাকা।

শফিউল ইসলাম নামে এক ঘোড়া চালক জানান, প্রতিদিন ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত তাদের আয় হয়। 

গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফুল আলম জানান, চরাঞ্চলে যোগাযোগ ও কৃষিপণ্য আনা নেয়ায় ঘোড়ার গাড়ি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তারা যেকোনো প্রয়োজনে আসলে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

জেলার ১৬৫টি চরে প্রায় ৮ শতাধিক ঘোড়ার গাড়ি চলাচল করছে।