ঢাকা,  শুক্রবার  ২৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ট্রাক থেকে চাল কুড়ানো সেই গীতা বিশ্বাসের পাশে প্রশাসন

প্রকাশিত: ২০:৪২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ট্রাক থেকে চাল কুড়ানো সেই গীতা বিশ্বাসের পাশে প্রশাসন

ট্রাক থেকে চাল কুড়ানো সেই গীতা বিশ্বাসের পাশে জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্টেট প্রতীক দও।

‘ঘরে খাবার নেই, ট্রাক থেকে চাল কুড়িয়ে নিলেন বৃদ্ধা’ শিরোনামে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ৫০ বছরের সেই বৃদ্ধা নারী গীতা বিশ্বাসের দায়িত্ব নিয়েছে সরকার। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গীতা বিশ্বাসকে খুঁজে বের করে তার পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।

এ সময় ২০ কেজি চাল, ১০ কেজি ডাল, ১০ লিটার তেল, ৪ কেজি আলু, ২ কেজি লবণ, ২ কেজি চিনি, সাবান, শ্যাম্পুসহ প্রায় ২ মাসের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি এবং নগদ ৫ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়। এ সময় গীতা বিশ্বাসের নিজ বাড়ি মীরসরাইয়ের জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গীতা বিশ্বাসের স্বামী উজ্জ্বল বিশ্বাস প্রতিবন্ধী ও মানসিক ভারসাম্যহীন। নিঃসন্তান এই দম্পতির বাড়ি মীরসরাই উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। কিন্তু আত্মীয়দের অত্যাচারে বাড়ি ছেড়েছেন ১০ বছর আগে। গত দুই বছরে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয়ের খোঁজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এখন থাকেন চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের চৌমুহনী এলাকার মিয়া বাড়ির নিচতলার একটি ঘরে। কিন্তু তাদের ঘরে খাবার ছিল না। বাধ্য হয়েই ওএমএসের ৩০ টাকার চাল কিনতে গিয়েছিলেন গীতা বিশ্বাস। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও চাল শেষ হওয়ায় কিনতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে চালের জন্য ট্রাকে উঠে যান। পরে ট্রাকে ছড়িয়ে থাকা চাল ব্যাগের মধ্যে নিতে থাকেন গীতা বিশ্বাস। কিন্তু একপর্যায়ে তার ব্যাগ কেড়ে নেন বিক্রেতারা। এমন খবর গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

খবর পেয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে গীতা বিশ্বাসের কাছে হাজির হন জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দও। এ সময় তিনি বলেন, ‘ডিসি স্যারের নির্দেশে এখানে এসেছি। খবরটি দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর দুই মাসের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার নিয়ে আসি। এ ছাড়া মীরসরাইয়ের ইউএনও স্যারকে এই ভদ্র নারীর বিষয়টি মানবিকভাবে দেখার জন্য বলা হয়েছে। তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বা ওএমএস এর কার্ড করে দেয়া যায় কিনা সেটি ইউএনও স্যার দেখবেন। এ রকম অসহায় ও গরিব মানুষের পাশে জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম সবসময় ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।’

এ ছাড়া স্থানীয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব নজরুল ইসলাম বাহাদুর গীতা বিশ্বাসকে ১৫ দিন পরপর চাল ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাঠানোর আশ্বাস দেন।

এ সময় গীতা বিশ্বাস জানান, অভাবের তাড়নায় চাল কুড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছি। ওএমএসের চাল লাইন ধরে কিনতে গেলে নিতে পারিনি। ঘরে একটু চাল ছিল না। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা ও টাকা পেয়ে খুব ভালো লাগছে। আমার মীরসরাইয়ের শ্বশুরবাড়ির জায়গা থেকে ষড়যন্ত্র করে বিতাড়িত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি, আমাদের জায়গাটি যেন ফিরিয়ে দেয়া হয়।