ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ২৫ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

হ্রদের জলে জেলের জাল

প্রকাশিত: ১৩:২১, ১৮ আগস্ট ২০২২

হ্রদের জলে জেলের জাল

মৎস্য আহরণ শুরু

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে বুধবার (১৭ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে ফের মৎস্য আহরণ শুরু হয়েছে। হ্রদের বুকে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। জাল ফেলা ও মাছ ধরায় ব্যস্ত এখানকার জেলেরা।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সরেজমিন দেখা যায়, সারা রাত মাছ ধরে সাতসকালে সেই মাছ ছোট ছোট বোটে করে নিয়ে আসা হয়েছে জেলার সর্ববৃহৎ অবতরণ কেন্দ্র ফিশারি ঘাটে। তাই পুরো পন্টুন ভরে গেছে ছোট-বড় সব মাছে। সেখানে পরিশোধ করা হচ্ছে রাজস্ব। অন্যদিকে শ্রমিকরা সেই মাছ প্রক্রিয়াজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ফিশারি ঘাটজুড়েই চলছে কর্মযজ্ঞ। তবে প্রথম দিনে কার্পজাতীয় মাছ কম থাকলেও কাচকি ও চাপিলার আধিক্য চোখে পড়ার মতো। আহরণের মাছের আকার ও পরিমাণ নিয়ে ব্যবসায়ীদের রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

মাছ ব্যবসায়ী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘যেমন আকারের মাছের আশা করেছিলাম, তেমন আকারের মাছ আসেনি।  মাছের সাইজ খুবই ছোট। এতে সরকার রাজস্ব পেলেও আমাদের ক্ষতি হবে। বিশেষ করে এত ছোট চাপিলা মাছ মানুষ কিনবে না। তাই চিন্তায় আছি। এভাবে চলতে থাকলে অনেকেই পুঁজি হারাবেন।’

অপর ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে, এতে অনেকেই খুশি হতে পারেন। তবে সেটা সাময়িক। আমার ৩৫ বছরের মাছ ব্যবসার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এত মাছ ধরা পড়ায় আমি শঙ্কিত। এভাবে চলতে থাকলে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে কাপ্তাই হ্রদ মাছশূন্য হয়ে যাবে। এতে অবশিষ্ট সময়ে মাছ না থাকার কারণে আমাদের প্রচুর লস হবে। কেননা, মাছ না পেলেও জেলেদের খরচ চালিয়ে যেতে হবে।’

দীর্ঘ সময়ের বেকারত্ব কাটিয়ে কাজে ফিরতে পেরে স্বস্তির হাসি শ্রমিকদের মুখে। ঘাটশ্রমিক রহিম মিয়া বলেন, ‘সেই বন্ধ হওয়ার পর থেকে সাড়ে তিন মাস বেকার জীবন কাটিয়েছি। এই উচ্চমূল্যের বাজারে কীভাবে দিন কেটেছে সেটা আর মনে করতে চাই না। আজ থেকে কাজে ফিরলাম, আশা করি পরিবার নিয়ে ভালোভাবে দিন কাটাতে পারব।’

অপর শ্রমিক শফিক বলেন, বন্ধকালীন অনেক দেনা হয়ে গেছে। এখন আয় করে সেই দেনা পরিশোধ করতে পারব।

তবে প্রথম দিনে অবতরণ হওয়া মাছ দেখে গত বছরের রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড ভাঙার আশা করছে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)।

বিএফডিসির (রাঙামাটি অঞ্চল) ব্যবস্থাপক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বন্ধকালীন আমাদের তৎপরতা ও নৌপুলিশের অভিযানের কারণে এবার চুরি করে কেউ মাছ ধরতে পারেনি। তার প্রমাণ আজকের অবতরণ ঘাটের এই চিত্র। প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। প্রথম ৪ ঘণ্টায় ৬০ মেট্রিক টন মাছ অবতরণ হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা গত বছরের থেকে অনেক বেশি রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হব।’

বিএফডিসির তথ্যমতে, গেল বছর জেলার ৫টি অবতরণ কেন্দ্রে ১৭ হাজার ৮৭০ মেট্রিক টন মাছ অবতরণ হয়, যা থেকে রাজস্ব আদায় হয় ১১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।