ঢাকা,  বুধবার  ২৪ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ইতালি যাওয়ার পথে যুবকের মৃত্যুর ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশিত: ১০:৩৩, ৯ আগস্ট ২০২২

ইতালি যাওয়ার পথে যুবকের মৃত্যুর ভিডিও ভাইরাল

যুবকের মৃত্যুর ভিডিও ভাইরাল

উন্নত জীবনের আশায় গ্রিস থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে প্রচণ্ড গরমে তাপস সরকার নামের সুনামগঞ্জের বাসিন্দা এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

সম্প্রতি তাপস সরকারের মৃত্যুর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জেলার ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাগউচা গ্রামের মৃত সতীশ চন্দ্র সরকার ও জোছনা রানী তালুকদারের বড় ছেলে তাপস ছাতকে তার স্বজনের মুদি দোকানের পরিচালক হিসেবে কাজ করতো এবং ছাতক শহরের মন্ডলীভোগ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন।

কোভিড মহামারির ৬ মাস আগে বন্ধুদের সঙ্গে অবৈধভাবে তুরস্ক হয়ে গ্রিসে চলে যায়। সেখান থেকে গ্রিসে বসবাসকারী বাংলাদেশি এক দালালের মাধ্যমে চুক্তি করেন গ্রিস থেকে সার্বিয়া যাওয়ার। কথা ছিল পরে সার্বিয়া থেকে অন্য দালালের মাধ্যমে যাবেন ইতালি।

এ রুটে দালালরা প্রথমে গ্রিসের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আলবেনিয়া প্রবেশ করান। পরে আলবেনিয়ায় ২ থেকে ৩ দিন রেখে সুযোগ বুঝে মন্টিনিগ্রো নিয়ে যান। মন্টিনিগ্রো নিয়েই আটকে রেখে চুক্তি করা অর্থ আদায় করেন। টাকা পরিশোধ হলে নিয়ে যান সার্বিয়া অথবা বসনিয়ায়। পরে সেখান থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে স্লোভেনিয়া হয়ে ইতালি পৌঁছানো হয়ে থাকে।

এদিকে সেই চুক্তি অনুযায়ী গত ৩ আগস্ট গ্রিস থেকে তাপসসহ প্রায় ৩০ জনের একটি ‘গেইম’ দলকে আলবেনিয়া পৌঁছায় দালাল চক্র। আলবেনিয়া স্থল সীমান্ত থেকে তীব্র গরমের মাঝে ৮ ঘণ্টায় উঁচু পাহাড় পাড়ি দিয়ে মন্টিনিগ্রো প্রবেশের সময় হঠাৎ পাহাড়ের মাঝে লুটে পড়েন তাপস। এ সময় তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দালালসহ অন্যান্য যাত্রীরা তাকে রেখেই চলে যান। তার সঙ্গে থাকা পরিচিত দুইজন অনেক চেষ্টা করে তার কোনো সাড়া না পেয়ে তারাও চলে যান। তবে তারা ওই ঘটনার একটি ভিডিও করে গ্রিসে থাকা স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দেয়।

নিহত তাপস সরকার এসএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। সুমন সরকার নামে তার একজন ছোট ভাই আছে। ছোট ভাই সুমন সরকার জানায় তার ভাই তাপস গ্রিস থেকে ইতালি যেতে চেয়েছিল কিন্তু প্রচণ্ড গরমে সে মারা যায়। ফেসবুকে ভিডিও দেখে মৃত্যু বিষয় নিশ্চিত হন স্বজনরা।

তাপস সরকারের কাকা জয়শ্রী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্যামল সরকার বলেন, নিহত তাপস সরকার তার ভাতিজা হয়। আনুমানিক আড়াই বছর আগে সে বিদেশে যায়। ৭ আগস্ট তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিহত তাপসের ছবি দেখে মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হন।

জয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সঞ্জয় রায় চৌধুরী জানান, এলাকার একজন ছেলে গ্রিস যাওয়ার পথে মারা গেছে এমন খবর তিনি শুনেছেন। তবে বিস্তারিত জানেন না।