ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

রাবির আবাসিক হলে ১২০ প্যাকেট খাবার লুট

প্রকাশিত: ১৫:১৫, ২৬ মার্চ ২০২২

রাবির আবাসিক হলে ১২০ প্যাকেট খাবার লুট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শহীদ শামসুজ্জোহা হলে আবাসিক ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবারের ১২০ প্যাকেট লুটের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (২৬ মার্চ) দুপুরে হলের ডাইনিংয়ে আবাসিক শিক্ষার্থীদের খাবার বিতরণের সময় এমন ঘটনা ঘটে।

খাবার লুটে অভিযুক্তরা হলেন- শহীদ শামসুজ্জোহা হল ছাত্রলীগের সভাপতি চিরন্তন চন্দ এবং সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, হলে খাবার বিতরণকালে ছাত্রলীগের সভাপতি চিরন্তন ও সাধারণ সম্পাদক মোমিনের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী টোকেন ছাড়া জোরপূর্বক প্রাধ্যক্ষের সামনেই ১২০ প্যাকেটের মতো খাবার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এতে খাবার সংকটের সৃষ্টি হয় এবং অধিকাংশ সাধারণ শিক্ষার্থীদের টোকেন থাকা সত্বেও তারা খাবার পায়নি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সারোয়ার বলেন, টোকেন নিয়ে খাবার নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকাকালীন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এমন আচরণ দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছি। তাদের এমন আচরণ দেখে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আমার টোকেনটি জমা দিয়ে খাবার না নিয়েই চলে আসি। ছাত্রলীগের মতো এমন ঐতিহ্যবাহী সংগঠন আজকে স্বাধীনতা দিবসের মতো দিনে সামান্য খাবার নিয়ে যে আচরণ করেছে তা কোনো ভাবেই কাম্য নয়।

জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক একরামুল ইসলাম বলেন, খাবার পরিবেশনের সময়ে ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা টোকেন ছাড়াই আমাদের কাছে একজনের জন্য পাঁচটা করে খাবারের প্যাকেট দাবি করে। আমরা তাদের জনপ্রতি এক প্যাকেট করে খাবার দিতে রাজি হই। কিন্ত তারা আমাদের আদেশ অমান্য করে জোরপূর্বক প্রায় ১২০ প্যাকেট খাবার নিয়ে যায়। এতে অনেক শিক্ষার্থীর টোকেন থাকা সত্বেও তাদেরকে সময়মতো খাবার দিতে পারিনি। তবে পরবর্তীতে হোটেল থেকে খাবার ক্রয় করে তাদেরকে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে হল সভাপতি চিরন্তন চন্দ এবং সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম বলেন, আমাদের কর্মীদের জন্য আমরা একসঙ্গে খাবারের প্যাকেটগুলো নিয়েছিলাম। আর ১২০ প্যাকেট খাবার নেওয়ার অভিযোগটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন। আমরা ৭০ প্যাকেটের মতো খাবার নিয়েছি। খাবার সংকটের এই বিষয়টি হল প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার জন্যই হয়েছে।

এবিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ বলেন, আমরা ৪৮০ জনের খাবার পরিবেশন করেছিলাম এর বিপরীতে আমাদের থেকে ৩৯০ জন শিক্ষার্থী টোকেন ক্রয় করেছিল। সে হিসেবে হলের স্টাফদের খাওয়ানোর পরেও আমাদের আরো অতিরিক্ত খাবার থেকে যাওয়ার কথা। তারা টোকেন ছাড়াই ১২০ প্যাকেট খাবার নিয়েছে বলেই এই সংকট তৈরি হয়েছে।

হল প্রাধ্যক্ষ আরো বলেন, অভিযুক্তরা ছাত্রলীগ বা যে দলেরই হোক না কেন, তারা প্রথমত হলের শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থী হিসেবে তারা হলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে। আমি এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের হল থেকে বহিস্কার করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এরা ছাত্রলীগকে শেষ করে দিচ্ছে। এরা নামধারী ছাত্রলীগ। যারা স্বাধীনতা দিবসের দিনে এই জঘন্য কাজ করতে পারে, আমার ধারণা এদের ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করলে ছাত্রলীগেরই সুনাম হবে।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কথা হয়েছে। তারা এটি সমাধান করে নিয়েছেন।’

গাজীপুর কথা