ঢাকা,  শুক্রবার  ২৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

দুর্ভোগের আরেক নাম ইলিশা ফেরিঘাট

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২

দুর্ভোগের আরেক নাম ইলিশা ফেরিঘাট

দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে সহজ যোগযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ভোলা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়ক। অথচ বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জরিত এ মহাসড়কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভোলা জেলার ইলিশা ফেরিঘাট। চালু হওয়ার এক যুগ পার হলেও এখানে লাগেনি আধুনিকতার ছোঁয়া।

এখন পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি কারপার্কিং-টার্মিনাল। এ কারণে ভোলা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের ৪ কিলোমিটার অংশ দখল করে দেখেছে মালবোঝাই ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও অন্যান্য যানবাহন। ফলে এ রুটে যানজট যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে গেছে। চালক-যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। এছাড়া ফেরি সঙ্কট তো আছেই। জেলা প্রশাসন বলছে, টার্মিনালের জন্য বিআইডব্লিউটিএ দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জায়গা নির্ধারণ করা হলে দ্রুত টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে।

 

দুর্ভোগের চিত্র ফুটে উঠেছে ইলিশা লঞ্চঘাটেও। ভাঙা  পন্টুন দিয়ে লঞ্চে ওঠা-নামায় যাত্রীরা পড়েন ভোগান্তিতে

দুর্ভোগের চিত্র ফুটে উঠেছে ইলিশা লঞ্চঘাটেও। ভাঙা পন্টুন দিয়ে লঞ্চে ওঠা-নামায় যাত্রীরা পড়েন ভোগান্তিতে

বরিশাল থেকে আসা পরিবহন শ্রমিক সেলিম নাজির জানান, ভোলা-লক্ষীপুর রুট দিয়ে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ২১টি জেলায় যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করে। অথচ এ রুটের একমাত্র ফেরিঘাট ইলিশায় বাড়তি কোনো সুযোগ-সুবিধা তো নেই, উল্টো পোহাতে হয় দুর্ভোগ। এখানে শ্রমিকদের জন্য আবাসন-বিশ্রামের ব্যবস্থা নেই, পার্কিং বা টার্মিনাল নেই। ফলে মহাসড়কেই গাড়ি পার্ক করতে হয়। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অসুবিধায় পড়েন।

ট্রাকচালক মো. ইব্রাহীম জানান, এক যুগের বেশি সময় ধরে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে চলাচল করছেন। এত বছরেও ইলিশা ফেরিঘাটের আধুনিকায়ন হয়নি। নির্মাণ হয়নি আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল। এতে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হয়, ফেরির সিরিয়াল পেতে পোহাতে হয় দুর্ভোগ।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, ইলিশা ফেরিঘাট নানা সমস্যায় জর্জরিত। মাত্র ৫০ মিটার জায়গার মধ্যে দুটি ফেরিঘাট, ঢাকা-ভোলা রুটের লঞ্চঘাট, লক্ষীপুরের লঞ্চঘাট, স্পিডবোট ঘাট। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘাটে প্রচুর চাপ থাকে। টার্মিনাল না পেয়ে মহাসড়কে গাড়ি পার্ক করায় ৩-৪ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট থাকে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি যাত্রী-পরিবহন শ্রমিকদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

 

নেই টার্মিনাল, মহাসড়ক দখল করে পার্ক করা হয়েছে পণ্যবাহী গাড়ি। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট-ভোগান্তি

নেই টার্মিনাল, মহাসড়ক দখল করে পার্ক করা হয়েছে পণ্যবাহী গাড়ি। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট-ভোগান্তি

যাত্রী ফাহিম আহমেদ জানান, যাত্রী ছাউনি, বিশ্রামাগার, পাবলিক টয়লেট, পার্কিং, টার্মিনালসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেলে ঢাকা ও লক্ষীপুর হয়ে অন্যান্য জেলায় চলাচলের জন্য ইলিশা ঘাট হতে পারে চমৎকার একটি রুট।

ইলিশা লঞ্চ ও ফেরিঘাটের ইজারাদার ইউসুফ পাটোয়ারী জানান, এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা-লক্ষ্মীপুরগামী ২০টি লঞ্চ, দুটি সি-ট্রাক, তিনটি ফেরি ছাড়াও অসংখ্য স্পিডবোট চলাচল করে। অচিরেই আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা না করলে ইলিশা ঘাট থেকে সরকারের যে রাজস্ব আয় হচ্ছে- তা কমে যাবে।

ইলিশা ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক পারভেজ খান জানান, পাকা সংযোগ সড়ক, মানসম্পন্ন পন্টুনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা তারাও চান। এসব বিষয় একাধিকবার জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ দফতরে জানানো হয়েছে।

 

ভাঙা পন্টুন দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে উঠতে হচ্ছে ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরগামী যাত্রীদের

ভাঙা পন্টুন দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে উঠতে হচ্ছে ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরগামী যাত্রীদের

ভোলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুজিত হাওলাদার জানান, জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ইলিশা ফেরিঘাটে পার্কিং-টার্মিনাল হচ্ছে না। বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে। এরই মধ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিগগিরই এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

গাজীপুর কথা