ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ২৫ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

সার্জেন্ট মাহমুদের বিরুদ্ধে চালককে মারধরের অভিযোগ

প্রকাশিত: ১৭:২৭, ২১ জানুয়ারি ২০২২

সার্জেন্ট মাহমুদের বিরুদ্ধে চালককে মারধরের অভিযোগ

বগুড়ায় সদর উপজেলায় এক মাইক্রোবাস চালককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ট্রাফিক সার্জেন্ট মাহমুদ হোসেনের বিরুদ্ধে। গত বুধবার বিকেলে সদরের চারমাথা এলাকায় মারধরের এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মাইক্রোবাস চালকের নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পুখুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নিজেই মাইক্রোবাসটির মালিক ও চালক।

রফিকুলকে যখন মারধর করা হয় হয়, ওই সময় তার গাড়িতে সপরিবারে ছিলেন নওগাঁ জেলার সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল নয়ন। কথা হয় তার সঙ্গে।

তিনি বলেন, পারিবারিক প্রয়োজনে বুধবার রফিকুলের মাইক্রোবাস যোগে বগুড়া গিয়েছিলাম। বিকেলে ফেরার পথে বগুড়া শহরের চারমাথা এলাকায় সার্জেন্ট মাহমুদ মাইক্রোবাসটি থামান এবং কাগজপত্র দেখতে চান। রফিকুল বলেন কাগজ এখনো অফিস থেকে উঠানো হয়নি। আর এখনো একমাসও হয়নি তিনি (চালক) রিকুইজিশন খেটেছেন বলে সার্জেন্টকে জানান। পরে চালককে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখাতে বলেন সার্জেন্ট মাহমুদ। চালক তা দেখালেন এবং একই সঙ্গে অন্যান্য কাগজপত্রও দেখালেন। পরে চালককে ডেকে নিয়ে তার কাছ থেকে নওগাঁর রিকুইজেশন স্লিপ নেন সার্জেন্ট মাহমুদ। পরে তাকে (চালক) ২৯ জানুয়ারি বগুড়া আসার নির্দেশ দিয়ে নতুন একটি রিকুইজিশন স্লিপ (ফরম) দেওয়া হয়। বগুড়ায় নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের জন্য তার গাড়ি রিকুইজিশন করা হয়। অথচ গাড়িটি নওগাঁ বদলগাছী উপজেলার, যা বগুড়া থেকে অনেক দূরে অবস্থিত।

আশরাফুল নয়ন বলেন, বগুড়ার রিকুইজিশন স্লিপ নিয়ে রফিকুল ক্ষোভ প্রকাশ করে গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময় সার্জেন্ট মাহমুদ পেছন থেকে রফিকুলকে দাঁড়াতে বলেন। পরে রফিকুলের কাছে এসে তাকে গালি-গালাজ ও মারধর (কিল-ঘুষি) করা শুরু করেন। পরে রফিকুলকে গলা ধরে ধাক্কা দেওয়া হয়। 

ভুক্তভোগী মাইক্রোবাস চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, এখনো একমাস হয়নি নওগাঁয় রিকুইজিশন খেটেছি। নওগাঁ পুলিশ লাইন্সে এখনো আমার গাড়ির কাগজ জমা আছে। এসব বলার পরেও সার্জেন্ট মাহমুদ হোসেন বগুড়া আসার নির্দেশ দিয়ে নতুন রিকুইজিশন স্লিপ আমার হাতে দেন। তখন আমি কষ্ট পেয়ে সার্জেন্ট মাহমুদ হোসেনকে বলেছিলাম বারবার গাড়ি রিকুইজিশন না করে একেবারে গাড়িটাই নিয়ে নেন। এ কথা বলে আমি গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। ওই সময় তিনি আমাকে পেছন থেকে ডাক দেন এবং বলেন তোকে না মেরে থাকায় যাবে না। একথা বলার পরপরই সাজেন্ট মাহমুদ আমাকে কিল-ঘুষি মারেন। এছাড়াও সার্জেন্ট মাহমুদ আমাকে এমনভাবে ধাক্কা দিয়েছেন যে আর একটু হলে অন্য একটি গাড়ির নিচে পড়ে প্রাণ হারাতাম। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, আমি সাজেন্ট মাহমুদের বিচার চাই। তিনি আমাকে এভাবে মারধর কেন করলেন তার জবাব দিতে হবে। আমি এ ঘটনার কঠিন বিচার চাই। 

জানতে চাইলে অভিযুক্ত সার্জেন্ট মাহমুদ হোসেন মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রফিকুলের গাড়ি রিকুইজিশন করার কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। 

জানতে চাইলে বগুড়ার ট্রাফিক ইনচার্জ (টিআই) ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, আমি মাইক্রোবাস চালক রফিকুলের সঙ্গে কথা বলেছি। সার্জেন্ট মাহমুদ তাকে মারধর করেছেন- বিষয়টি সেভাবে আমাকে বলেননি চালক রফিকুল। রফিকুলের গাড়ি রিকুইজিশন করা হয়েছে। আমি শুনেছি রফিকুলের গাড়ি এর আগে নওগাঁয় রিকুইজিশন করা হয়েছিল। তার আগে বগুড়াতেও তার গাড়ি রিকুইজিশন করা হয়েছিল বলে আমাকে জানান চালক রফিকুল। সব কথা শুনে আমি তাকে বগুড়ায় আসতে বলেছি। 

তিনি আরও বলেন, রফিকুলকে মারধরের অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর আমি যতদূর শুনেছি রফিকুলই সার্জেন্ট মাহমুদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছেন। আর সরকারি কাজে যখন-তখন যতবার প্রয়োজন একটি গাড়ি রিকুইজিশন করা যায়। 

গাজীপুর কথা