ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ২৮ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ২৬ দিন পর লাশ হয়ে ফিরলেন দগ্ধ মনিকা

প্রকাশিত: ১৮:৪২, ১৯ জানুয়ারি ২০২২

লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ২৬ দিন পর লাশ হয়ে ফিরলেন দগ্ধ মনিকা

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়েছিলেন স্কুলশিক্ষক মনিকা রানি হালদার। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার ২৬ দিন পর লাশ হয়ে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরেছেন তিনি।

মৃত মনিকা রানি হালদার বরগুনা পৌর শহরের গগন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তার স্বামী বরগুনা সদরের ফুলঝুরি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাবু বঙ্কিম চন্দ্র মজুমদার। তিনিও একই লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।

বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে স্কুলশিক্ষক মনিকা রানির লাশ এসে পৌঁছায় বরগুনায়। এরপর তাকে নেয়া হয় শহরের গগন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। সেখানে গীতা পাঠ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তাকে সৎকারের জন্য গ্রামের বাড়ি ফুলঝুরিতে নেয়া হয়।

গগন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, মেডিকেল চেকআপের জন্য সহকারী শিক্ষক মনিকা রানি হালদার গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর ছুটি নিয়ে ঢাকায় যান। সেখানে চিকিৎসা শেষে তারা স্বামী-স্ত্রী অভিযান-১০ লঞ্চে ফিরছিলেন। ২৪ ডিসেম্বর তার ক্লাস নেয়ার কথা ছিল। বিদ্যালয়ে তিনি ঠিকই ফিরলেন, তবে লাশ হয়ে। তার মৃত্যুতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই শোকাহত। 

মনিকা রানি হালদারের ছেলে বিকাশ জানান, দগ্ধ হওয়ার পর প্রথমে তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়। সেখানে ২৫ দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন জানিয়েছেন, মনিকা রানি হালদারের শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। প্রথম থেকেই তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরবর্তীতে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের মরদেহ এসেছে বরগুনায়। এর মধ্যে ২৪ জনের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় তাদের গণকবরে দাফন করা হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত করে স্বজনরা নিয়ে গেছেন। নিহতদের দাফন-কাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে সহায়তা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদী অতিক্রমকালে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে। ঐ ঘটনায় বরগুনা, ঝালকাঠি ও ঢাকায় তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় লঞ্চের মালিকসহ পাঁচজন কারাগারে রয়েছেন।

গাজীপুর কথা