ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

সিজারের সময় নবজাতকের কনুই থেকে আলাদা হয়ে গেল হাতের হাড়

প্রকাশিত: ১৭:৫৭, ১৯ জানুয়ারি ২০২২

সিজারের সময় নবজাতকের কনুই থেকে আলাদা হয়ে গেল হাতের হাড়

ফরিদপুরের আরামবাগ প্রাইভেট হাসপাতারে সিজারের সময় এক নবজাতকের হাত ভেঙে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন নবজাতকের বাবা মো. আরিফুল ইসলাম সজল।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করে হাসপাতালটি বন্ধ ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর হাসপাতালটিতে সিজারের জন্য আরিফুল ইসলাম সজলের প্রসূতি স্ত্রীকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর পরই তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। ডা. শারমিন সুলতানা জুঁই এ সিজার করেন। কিন্তু সিজার চলাকালে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের হাতের কনুই থেকে হাড়ের জয়েন্ট ছুটে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো কিছু না জানানোয় ভুক্তভোগীরা স্বাভাবিকভাবে ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

পরদিন নবজাতকটি অতিরিক্ত কান্না করতে থাকলে শিশু বিশেষজ্ঞ খ. ডা. মো. আব্দুল্লা হিস সায়াদ কাছে নিয়ে গেলে তিনি ল্যাবএইড হাসপাতালের ডা. সৈয়দ আসিফ উল আলম সাহেবের কাছে রেফার করেন। সেখান থেকে ঢাকা হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. সারোয়ার ইবনে সালামের কাছে রেফার করা হয়। বর্তমানে সেখানেই নবজাতকের চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসক জানান সিজারের সময় ডাক্তারদের অবহেলার কারণেই বাচ্চার হাতের কনুই থেকে হাড় আলাদা হয়ে যায়।

এ ঘটনায় আরামবাগ হাসপাতালে যোগাযোগ করলে নবজাতকের বাবা মো. আরিফুল আলম সজলের সঙ্গে অসম্মানজনক ব্যবহার করেন ডা. শারমিন সুলতানা জুঁই ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নবজাতকের বাবা মো. আরিফুল ইসলাম সজল বলেন, আমার বাচ্চার শারীরিক নির্যাতন, আর্থিক ও মানসিক নির্যাতনের জন্য উল্লেখিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এর আগেও আরেকটি সিজারের সময় এ রকমই ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা.সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্স না থাকা এবং অদক্ষ নার্স দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগে হাসপাতালটির সব কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

আরামবাগ হাসপাতালের এমডি মাসুদুর রহমান বলেন, নবজাতকের হাড় ভাঙার অভিযোগ সঠিক নয়। হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় তারা কোনো অভিযোগ তোলেননি। এমনকি বাসায় নেয়ার পরও অভিযোগ তোলেননি। ঘটনার মাস খানেক পর অভিযোগ তোলা কতটুকু যুক্তিযুক্ত। আমাদের হাসপাতালে অন্য কিছু সমস্যা ছিল। এ কারণে সিভিল সার্জন সাময়িক বন্ধ রাখতে বলেছেন। আমরা সমস্যাগুলো সমাধান করে নতুন করে চালু করার ব্যবস্থা করবো।

এদিকে, গত ১৫ জানুয়ারি ফরিদপুর পৌর শহরের আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গাইনি ডাক্তার ছাড়াই সিজার করতে গিয়ে নবজাতকের কপাল কেটে ফেলেন আয়া ও নার্স। কপালে ৯টি সেলাই নিয়ে শিশুটি এখন গুরুতর অসুস্থ। ঐ ঘটনায় ক্লিনিকের মালিক মো. জাকারিয়া মোল্লা পলাশ ও আয়া চায়না বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।

গাজীপুর কথা