ছবি: সংগৃহীত
বন্যার্তের জন্য সংগ্রহ করা ত্রাণের টাকার দুই-তৃতীয়াংশ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা যুবদলের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) জেলা যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর সাবেক ১৮ জন নেতার স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন- বাঘারপাড়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক এখলাচ হোসেন এবং সদস্যসচিব বিল্লাল বিশ্বাস। তবে অভিযুক্ত দুই যুবদল নেতা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘোষিত কর্মসূচির আওতায় বাঘারপাড়া উপজেলা যুবদল এবং উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে সভা হয়। বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে ১০ হাজার টাকা করে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক একলাচ হোসেন এবং সদস্যসচিব বিল্লাল বিশ্বাসের কাছে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ সিদ্ধান্ত মোতাবেক জহুরপুর ইউনিয়ন সাড়ে তিন হাজার, বন্দবিলা ইউনিয়ন ১০ হাজার, রায়পুর ইউনিয়ন সাড়ে সাত হাজার, নারিকেলবাড়ীয়া ইউনিয়ন সাত হাজার, ধলগ্রাম ইউনিয়ন ১০ হাজার, দোহাকুলা ইউনিয়ন ছয় হাজার, দরাজহাট ইউনিয়ন ১০ হাজার, বাসুয়াড়ী ইউনিয়ন ১০ হাজার, জামদিয়া ইউনিয়ন থেকে ৬ হাজার ৪০০ টাকা দেয়। সর্বমোট ৭০ হাজার ৪০০ টাকা সংগ্রহ করে অভিযুক্ত যুবদলের ওই দুই নেতার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অভিযোগকারীদের দাবি, ওই টাকা থেকে যশোর জেলা যুবদল ফান্ডে মাত্র ১০ হাজার টাকা এবং বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির ফান্ডে ১৫ হাজার টাকা, সর্বমোট ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ৪৫ হাজার ৪০০ টাকার কোনো হদিস নেই। এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় দরাজহাট ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আল রুবায়েত শামীমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে দুই যুবদল নেতার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাঘারপাড়া উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব বিল্লাল বিশ্বাস তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সাবেক ওই নেতারা (অভিযোগকারীরা) ভুল তথ্য দিয়েছেন। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, জেলা যুবদল নেতৃবন্দ আমাদের তাগাদা দেন দ্রুত অর্থ ফান্ডে জমা দিতে। আমরা তাৎক্ষণিক সরবরাহ ২৫ হাজার টাকার মধ্যে ১০ হাজার জেলা যুবদল এবং ১৫ হাজার টাকা উপজেলা বিএনপিকে দেই। এরপর ধীরে ধীরে টাকা ওঠে এবং তা ৬০ হাজারের বেশি না। এর মধ্যে উপজেলা বিএনপিকে ফের ১৫ হাজার টাকা এবং গত ৭ সেপ্টেম্বর দলের কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুবের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কিছু খরচ হয়েছে।
এসব বিষয়ে দলের নেতা এবং জেলা যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
যশোর জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি প্রথমে তদন্ত করা হবে। তদন্তে যেটা উঠে আসবে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
তিনি আরও বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা যুবদল কোনো ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেয় না। বরং আমরা দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি।