ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এনবিআরের বৈঠক: বাজেটে আসছে নতুন ছাড়

প্রকাশিত: ১৭:৪০, ১২ মে ২০২২

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এনবিআরের বৈঠক: বাজেটে আসছে নতুন ছাড়

দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বড় ধরনের ছাড়া আসছে। বিশেষ করে উৎপাদনমুখী নতুন নতুন খাত তৈরিতে দেয়া হবে কর ছাড়। এক্ষেত্রে শুল্ক ছাড়ের বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। 

এছাড়া আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেটকে ব্যবসায়ীবান্ধব করতে করহারের পুনবিন্যাস করারও পরিকল্পনা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে এসব বাস্তবায়নের বিষয়টি নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির ওপর। আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে এসব বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় করছাড়ের বিষয়টি প্রস্তাব করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে নতুন নতুন খাতে উদ্যেক্তা তৈরি এবং ব্যবসা সহজ করতে কর ছাড়ের পরিকল্পনা করেছে এনবিআর। বিশেষ করে গাড়ি উৎপাদন থেকে শুরু করে যেসব উৎপাদনমুখী খাত ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে সেসব খাতকে আগামী বাজেটে কর ছাড় দিয়ে উৎসাহিত করা হবে। আর বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব করতে করপোরেট করহার কমানোরও প্রস্তাব করা হচ্ছে। তবে এসব প্রস্তাব কতটা বাজেটে রাখা হবে তা নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর ওপর। এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার ১১টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবে এনবিআর। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম ছাড়াও এনবিআরের সদস্যরা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও অর্থ সচিবও এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছে এনবিআর সূত্র।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, তৈরি পোশাক খাতের মতো রপ্তানি বাড়াতে নতুন নতুন খাতে কর ছাড় দেয়ার প্রস্তাব করা হচ্ছে। বিশেষ করে গাড়ি উৎপাদন থেকে শুরু করে যেসব খাত এখনো কর সুবিধা পায়নি, সেসব খাত চিহ্নিত করে কর সুবিধা দেয়া হবে। এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড়ের বিষয়টিও বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। মূলত ব্যবসাবান্ধব বাজেট প্রণয়নে কাজ করছে এনবিআর।
সূত্রমতে, দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিমুখী নির্ধারিত খাতগুলোকে কর সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আগামী বাজেটে নতুন নতুন খাতকে কর সুবিধার আওতায় আনা হবে। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক এই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে করপোরেট করহার আরো আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হতে পারে আগামী বাজেটে। করের বোঝা কমানোর জন্য আরো বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হবে।

সূত্র জানায়, কর ছাড়ের ছড়াছড়ির পাশাপাশি করের আওতা বাড়ানোর বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে আগামী বাজেটে। নতুন নতুন খাতে যেমন কর সুবিধা দেয়া হবে, তেমনি কিছু খাত করের আওতায় আসবে। এছাড়া টিআইএনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর ফাঁকি বন্ধ করতেও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এছাড়া রিটার্ন জমার বিষয়টিও বিবেচনায় আসছে আগামী বাজেটে। আগামী বাজেটে ব্যয়ের আকার বাড়লেও বাড়ানো হচ্ছে আয়ের লক্ষ্যমাত্রাও। সেক্ষেত্রে এনবিআরের অটোমেশন ও ভ্যাট আদায় বাড়ানোর বিষয়ে পরিকল্পনা নেয়া হবে।

এসব নিয়ে কথা হয় বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী অর্থবছরের বাজেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগামী বাজেটে ব্যয়ের প্রাক্কলন বেশি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এক্ষেত্রে করহারের পুনর্বিন্যাস করে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে এনবিআরকে করফাঁকি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে অটোমেশন ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে, যাতে একজন করদাতা কোনো কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা না করেই নিজেই নিজেই কর দিতে পারেন। এতে রাজস্ব আয়ও বাড়বে, ভোগান্তিও কমবে।

গাজীপুর কথা