ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কবর থেকে শিশু তানজিনার মরদেহ উত্তোলন

প্রকাশিত: ১৬:৩৭, ১৬ আগস্ট ২০২২

কবর থেকে শিশু তানজিনার মরদেহ উত্তোলন

শিশু তানজিনা

রাজধানীর মুগদায় দাফনের ৩ দিন পর কবর থেকে তোলা হয়েছে ১০ মাসের শিশু তানজিনার মরদেহ। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে শিশুটির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। এরপর স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়।

মারা যাওয়া শিশুটি নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার চরকাশিরনগর গ্রামের অটোরিকশা চালক কিতাব আলীর মেয়ে।

মর্গে শিশুটির বাবা শারীরিক প্রতিবন্ধী কিতাব আলী জানান, তিনি ভাড়ায় অটোরিকশা চালান। ৯ বছর আগে তানিয়াকে বিয়ে করেন তিনি। পরিবার নিয়ে মুগদা পূর্ব মানিকনগর সোহাগ মিয়ার টিনসেড বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তানভির নামে ৭ বছরের আরেকটি ছেলে রয়েছে তাদের। এটি তার দ্বিতীয়ে বিয়ে। তানিয়াও জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। এছাড়া মানসিক সমস্যা রয়েছে। আর তার প্রথম স্ত্রী রাজশাহীতে থাকেন।

তিনি জানান, শুক্রবার (১২ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে তিনি রিকশা চালিয়ে বাসায় ফেরেন। এরপর গোসল করে ঘুমিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর স্ত্রী তানিয়া তাকে ডাকাডাকি করে বলেন, তানজিনা কোথায়? তখন কিতাব আলী সন্তানকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। বাসার ভেতরই বালতির ভেতর মাথা নিচের দিকে দিয়ে পড়া অবস্থায় দেখতেন পান। তবে বালতিতে সামান্য পানি ছিল।

এরপর প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

শিশুটির খালা মার্জিয়া আক্তার জানান, ওইদিন খবর পেয়ে গ্রামের বাড়ি নরসিংদী থেকে তিনি ও তার আরেক বোন রত্না ঢাকায় আসেন। বিকেলে ঢাকায় পৌঁছে দেখেন, শিশুটিকে দাফনের জন্য স্থানীয় কুমিল্লাপট্টি কবরস্থানে নেয়া হয়েছে। তবে মৃত্যুর বিষয় নিয়ে তাদের মনে সন্দেহ জাগে। এজন্য তারা আরেকটু দেরি করে দাফনের দাবি করেন। কিন্তু এলাকার কেউ তাদের কথা শোনেননি।

পরবর্তীকালে সেখান থেকে তারা কিতাব আলীর টিনসেড বাসায় গেলে প্রতিবেশীদের মুখে মৃত্যু নিয়ে নতুন তথ্য শুনতে পান। এরপর বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসা করলে প্রতিবেশীরা জানান, শিশুটির মা তানিয়াই তাকে গলা টিপে মেরে ফেলেছে। তখন তারা মুগদা থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ এসে শিশুটির বাবা-মা দুজনকেই আটক করে থানায় নেয়া হয়। তখন তানিয়া পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, গলা টিপে হত্যার পর মরদেহ বালতিতে ফেলে রেখেছিলেন তিনি।

মুগদা থানাধীন মুগদাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) নগেন্দ্র কুমার দাশ জানান, শিশুটির মরদেহ দাফনের পর মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হলে শিশুটির বাবা কিতাব আলী শনিবার (১৩ আগস্ট) তার স্ত্রী তানিয়াকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। (মামলা নং ৩৫)। পরে শিশুটির মা তানিয়াকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বলেছেন, রাগ ও ক্ষোভে তিনি নিজে শিশু সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করেছেন। এরপর বালতির ভেতর উল্টো করে রেখে দেন। গ্রেফতারের পর সেদিনই তাকে আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে সেখান থেকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

এসআই আরও জানান, আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে সোমবার (১৫ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লাপট্টির হাজী নাজিমউদ্দিনের পারিবারিক কবরস্থান থেকে শিশুটির মরদেহ উত্তোলনের করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

আরো পড়ুন