ঢাকা,  মঙ্গলবার  ১৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

এক মাঠে তিন জাতের হাইব্রিড তরমুজ চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ২৬ জুলাই ২০২১

এক মাঠে তিন জাতের হাইব্রিড তরমুজ চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পাত্রখোলা এলাকার কৃষক আব্দুল মতিন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং লালতীরের সার্বিক সহযোগিতায় একই মাঠে তিন জাতের হাইব্রিড তরমুজ চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন। তার সাফল্য দেখে খোদ কৃষি বিভাগই বিস্মিত। বিষয়টি এলাকার অন্যান্য কৃষকদের মধ্যেও সারা জাগিয়েছে।

রোববার (২৫ জুলাই) বিকেলে পাত্রখোলায় সরেজমিনে দেখা যায়, একই মাঠে একটি কালো রংয়ের, একটি হলুদ রংয়ের এবং আরেকটি সবুজ ডোরাকাটা রংয়ের তরমুজ। যার একটির নাম ব্ল্যাক বেবি, একটি মধুমালা ও অপরটি লালতীরের ল্যন ফাই জাতের হলুদ তরমুজ।

এর আগে শনিবার বিকেলে আব্দুল মতিনের তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শনে আসেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক, কৃষি বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ এলাকার কৃষকরা।

এ ব্যাপারে কৃষক আব্দুল মতিন জানান, দুই বিঘা জমিতে এই তিন জাতের তরমুজ চাষ করেন। তিন জাতের মধ্যে হলুদ রঙের লালতীরের হাইব্রিড ল্যন ফাই জাতটি সর্বাধিক ফলন হয়েছে। ফলের ওজন এবং আকারে সবাইকে আকর্ষণ করেছে। শুধু আকার নয় এর স্বাদ অসাধারণ। মধুর মতো মিষ্টি। বাজারে এর দরও ভালো পাচ্ছেন তিনি।

তিনি জানান, এই তিন জাতের তরমুজ চাষ করতে এখন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আর এখন পর্যন্ত  বিক্রি করেছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো। মাঠে যে পরিমাণ ফলন রয়েছে তাকে তিনি আরও দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী।

কৃষক আব্দুল মতিন আরও জানান, ল্যন ফাই জাতটির ফলন অন্যান্যদের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি এবং ফলের ওজন এক একটি ৩ থেকে ৪ কেজি এবং ফলে মিষ্টির পরিমাণ অন্যান্য জাতের চেয়ে অনেকগুণ বেশি। তাই আগামিতে এই জাতের তরমুজ ব্যাপকভাবে চাষ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ফলন দেখতে তার জমি পরিদর্শনে আসেন আশপাশের কৃষকরা। তারাও আগামীতে এ জাতের চাষ করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় তারা এটি চাষে কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ দেয়ার অনুরোধ জানান

এই প্রসঙ্গে লাল তীর সীডের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক তাপস চক্রবর্তী জানান, হাইব্রিড ল্যন ফাই জাতটি সবুজ ডোরাকাটা ও ভিতরে  হলুদ রঙ্গের শাসযুক্ত, এটি অধিক মিষ্টি। উত্তম পরিচর্যায় একেকটির তরমুজের ওজন হয় ৫ থেকে ৬ কেজি। সারাবছর মাচায় ও মাঠে চাষ করা যায় এটি। এ ফলের পরিপক্বতা আসে ৬৫ থেকে ৭০ দিনে। এ জাতটি চাষ করতে প্রতি শতকে বীজের পরিমাণ লাগে মাত্র ১ গ্রাম। উত্তম পরিচর্যায় একর প্রতি ফলন হয় ৩০ থেকে ৩৫ টন। কৃষকরা উপযুক্ত দাম পেলে এই জাতগুলো চাষে দিন দিন আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, এ প্রদর্শনীতে তিন জাতের বীজ লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে অধিক ফলন ও ফলের মিষ্টতার দিক থেকে হাইব্রিড ল্যন ফাই জাতটির ফলন খুবই ভালো হয়েছে।

জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও এই জাতগুলোর চাষ ছড়িয়ে দিতে চান তিনি।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন