ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ১৮ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

বগুড়া মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটে বিলুপ্তপ্রায় মাছের পোনা উৎপাদন

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ২৯ জুন ২০২১

বগুড়া মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটে বিলুপ্তপ্রায় মাছের পোনা উৎপাদন

বগুড়ার সান্তাহার মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট প্লাবণভূমি অবকাঠামোর দিক দিয়ে অবহেলিত হলেও এই প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের গবেষণায় একের পর এক মিলছে চমকপদ সাফল্য। বিলুপ্তির পথে ছোট মাছ ভেদা ও বাতাসি’র কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদনে সাফল্যের পর এবার সঙ্কটাপন্ন পিয়ালী মাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন করেছেন গবেষকরা।

এর আগে বিলুপ্তপ্রায় কুচিয়া’র নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন এবং গ্রীনহাউস নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পাঙ্গাস মাছের কৃত্রিম প্রজনন মৌসুম দুই মাস এগিয়ে নিয়ে আসার সাফল্য দেখিয়েছেন এখানকার প্রধান উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ডেভিট রিন্টু দাসের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল।

ড. ডেভিট রিন্টু দাস বলেন, ভেদা, বাতাসি এবং পিয়ালীসহ বিলুপ্ত প্রায় ও সঙ্কটাপন্ন ছোট প্রজাতির প্রায় ৩০ প্রকারের মাছের কৃত্রিম প্রজননে পোনা উৎপাদন কৌশল নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে প্রথম তিনটিতে সফলতা মিলেছে। আরো ২৫ জাতের ছোট মাছের কৃত্রিম প্রজনন নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চলছে। অচিরেই আরো কয়েকটি মাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদনে সফলতার আশা রয়েছে। তার নেতৃত্বে অপর দুই গবেষক হলেন মনিরুজ্জামান পাপ্পু এবং মালিহা খানম।

তারা বলেন, সদ্য সাফল্য পাওয়া পিয়ালী মাছটি মলা মাছের চেয়ে আকারে একটু বড়। সুস্বাদু পিয়ালী মাছ এক সময় আত্রাই, বাঙ্গালী, পদ্মা ও যমুনা নদীতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। কিন্তু অতিমাত্রায় আহরণ এবং পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে বর্তমানে সঙ্কটাপন্ন মাছের তালিকায় উঠেছে। ফলে বাজারে তেমন একটা মেলে না। তবে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পাওয়া পোনা উৎপাদন কৌশল মৎস্য চাষি পর্যায়ে দেয়া হবে। এতে করে অচিরেই বিলুপ্তপ্রায় ও সঙ্কটাপন্ন মাছগুলো পাওয়া সহজলভ্য হবে।

ড. ডেভিট রিন্টু দাস আরো বলেন, সর্বশেষ সাফল্য পাওয়া সংকটাপন্ন পিয়ালী মাছ সংগ্রহ করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। যমুনা, বাঙ্গালী, পদ্মা ও আত্রাই নদীর বিস্তীর্ণ এলাকা চষে বেড়িয়ে মেলে মাত্র পাঁচ জোড়া পরিপক্ক মাছ। সে মাছ গবেষণা কেন্দ্রের পুকুরে নিবিড় ভাবে প্রতিপালন করা হয়। এ সময় মাছটির খাদ্য ও খাদ্যাভাস পর্যবেক্ষণ করে সে ভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়।

গবেষণায় তারা দেখতে পান মে থেকে আগস্ট এবং ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মৌসুমে প্রজননক্ষম পরিপক্ক মা মাছ পাওয়া যায় এবং জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে জলাশয়ে পিয়ালী মাছের উপস্থিতি মেলে। ফলে প্রমানিত হয় পিয়ালী মাছের সর্বোচ্চ প্রজনন মৌসুম মে থেকে আগস্ট এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারি। একটি পরিপক্ক পিয়ালী মা মাছ দেড় থেকে তিন হাজারটি ডিম পাড়ে।

গবেষণাকালে গবেষকরা আরো দেখতে পান, একটি পরিপক্ক মা পিয়ালী মাছ ওজনে সাড়ে তিন থেকে ৬ গ্রাম হলেই প্রজনন উপযোগী হয়। তবে পুরুষ পিয়ালী মাছ স্ত্রী পিয়ালী থেকে ওজনে একটু বেশী হয়। বিলুপ্তপ্রায় ছোট মাছ ভেদা ও বাতাসি’র কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদনে সাফল্যের স্থানীয় হাওর বিল, নদীতে অবমুক্ত করার পর সেগুলো এখন স্থানীয় হাট-বাজারে মিলছে।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন