ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

২০২৫ সালে চা রপ্তানি হবে ১৫ মিলিয়ন কেজি

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ৫ আগস্ট ২০২২

২০২৫ সালে চা রপ্তানি হবে ১৫ মিলিয়ন কেজি

২০২৫ সালে চা রপ্তানি হবে ১৫ মিলিয়ন কেজি

দেশে প্রতিবছর ৬ শতাংশ হারে চা পানকারীর সংখ্যা বাড়ায় রপ্তানি কমছে পণ্যটির। দেশে উৎপাদিত চা অধিকাংশই ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা।তাদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে চায়ের ভোক্তা বাড়লেও বাগান সে হারে বাড়েনি। সরকারের উচিত হবে বাগান বাড়ানোর বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। তা হলে চায়ের সংকট হবে না, রপ্তানিও বাড়বে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে চায়ের চাহিদা রয়েছে। দেশীয় ভোক্তার চাহিদা অনুসারে দেশে এখন চায়ের সংকট নেই। সরকার চাশিল্প নিয়ে যেভাবে কর্মপরিকল্পনা করেছে তাতে ২০২৫ সালে চায়ের উৎপাদন হবে ১৪০ মিলিয়ন কেজি। আর এত পরিমাণ চা দেশি ভোক্তারা ব্যবহার করবেন না। বাকি থাকবে অনন্ত ১৫ মিলিয়ন কেজি চা, যেটি রপ্তানি করা হবে। তিনি বলেন, ভালো চা উৎপাদনের জন্য শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্যমতে, দেশে ২০০১ সালে চা উৎপাদন হয়েছে ৫ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার কেজি। দেশের মানুষ সম্ভাব্য চা পান করেছেন ৩ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার কেজি। ১ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার কেজি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে ৮৯ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

১৯ বছরে দেশে চায়ের উৎপান বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ। ২০১৯ সালে দেশে চায়ের উৎপাদন হয়েছে ৯ কোটি ৬০ লাখ ৭০ হাজার কেজি। একই বছর দেশের মানুষ পণ্যটি পান করেছেন ৯ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার কেজি। মাত্র ৬ লাখ কেজি চা রপ্তানি হয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে চায়ের উৎপাদন কমেছে ৯ লাখ ৬৮ হাজার কেজি। ২০২০ সালে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়। মাত্র ২ লাখ ১৭ হাজার কেজি চা রপ্তানি হয়েছে। বাকি ৮ কোটি ৪২ লাখ ২০ হাজার কেজি দেশের মানুষ ভোগ করেছেন। ২০২১ সালে চা রপ্তানি হয়েছে ৬ লাখ কেজি। উৎপাদন হয়েছে ৯ কোটি ৫৫ লাখ ১০ হাজার কেজি। মানুষ ভোগ করেছেন ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার কেজি চা। আর ২০২২ সালে মে পর্যন্ত চা উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার কেজি। রপ্তানি হয়েছে ৩০ লাখ কেজি। পাঁচ মাসে ভোগ করেছেন মানুষ ১ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা।

২০২১ সালের হিসাবে সম্ভাব্য ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার কেজি চা ব্যবহৃত হয়েছে দেশে। ১০০ গ্রামে ৩৩ কাপ চায়ের হিসাবে প্রতিকেজিতে (১০০০ গ্রাম) ৩৩০ কাপ চা হয়। সে হিসাবে ৯ কেটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার কেজি চায়ে ৩ হাজার ১৬৩ কোটি ৩৮ লাখ কাপ চা তৈরি করা সম্ভব, যা মানুষ এক বছরে পান করেছেন। দিনে প্রায় ৮ কোটি ৬ লাখ ৬৬ হাজার কাপ চা পান করেন এ দেশের মানুষ। ২০১০ সালে ছিল ৬ কোটি ৩২ লাখ কাপ চা। দুই দশক আগে ছিল সোয়া ৪ কোটি। প্রতিদিন বাড়ছে চা পানকারীর সংখ্যা।

বাংলাদেশ চা সংসদ চট্টগ্রাম ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামে বর্তমানে ২২টি চা বাগান রয়েছে। ২০২০ সালে চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রায় এক কোটি ১৪ লাখ কেজি। ২০২১ সালে ৯৬ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়। তিনি বলেন, দিন দিন চা ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। এক সময় অভিজাত লোকরা চা পান করতেন। এখন ৯৮ ভাগ লোক চা পান করেন। এটি এখন একটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে চাহিদা তৈরি করেছে।

এইচআরসি গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, দেশে চায়ের উৎপাদন বেড়েছে ঠিকই চা পাতার মান বেড়েছে কতটুকু সেটাই দেখার বিষয়। দেশে মানসম্মত চায়ের পরিমাণ কম। সেটি বাড়ানো উচিত।

বাংলাদেশ টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ওমর হান্নান বলেন, চায়ের রপ্তানি কমে যাওয়ার কারণ হচ্ছে স্থানীয় চাহিদা বৃদ্ধি। গত ৭-৮ বছরে দেশে প্রতিবছর চা পানকারীর সংখ্যা বাড়ছে প্রায় ৬ শতাংশ হারে। যেভাবে চা পানকারীর সংখ্যা বাড়ছে, সে তুলনায় উৎপাদন কম হলে আমদানি করতে হতো।

আরো পড়ুন