ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

শ্রীপুরে সফল পেঁপে চাষি তিন যুবক

প্রকাশিত: ০৮:০১, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

শ্রীপুরে সফল পেঁপে চাষি তিন যুবক

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বারতোপা গ্রামে পেঁপে চাষে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলেছেন তিন যুবক। নিজেদের জমি না থাকলেও তারা অন্য একজনের জমি লিজ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষ করেছেন এবং সফল পেঁপে চাষি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।করোনার কারণে বাজারে দাম কম থাকায় ইতোমধ্যে ৪ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছেন। মাস খানেকের মধ্যে আরো ১৫ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন বলে তারা আশা করছেন। চলমান বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এর কারণে মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। এই দুর্যোগের কারণে অনেকে চাকরি ব্যবসা হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে। তবে এই দুর্যোগ সময়ের মধ্যেও পেঁপে চাষ করে ব্যতিক্রম সফলতা পেয়েছেন তিন বন্ধু।

পেঁপে চাষে সফল তিন যুবক হলেন, শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংদিঘী গ্রামের প্রয়াত আজিজুল হকের ছেলে আসাদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলীর ছেলে ইমরান, প্রয়াত ছাবেদ আলীর ছেলে চান মিয়া।

পেঁপে চাষি ইমরান একজন কলেজ ছাত্র লেখা-পড়ার পাশাপাশি পেঁপে চাষ করে নিজের পড়াশুনার খরচ চালানোর পাশাপাশি সংসারেও টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করছেন। ইমরান জানায়, কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে তিন বন্ধু ৮ বিঘা জমি বাৎসরিক আশি হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে পেঁপের বাগান করেছেন। এখানে মোট ৩২০০ হাইব্রিড টপ লেডি জাতের পেঁপের চারা রয়েছে। চারা, বীজ, সার, জমি প্রস্তুত ইত্যাদি খাতে তার খরচ হয়েছে প্রায় বিঘা প্রতি ১ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে জমি থেকে পেঁপে তুলে ৪ লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। এখনও তাদের জমিতে অসংখ্য পেঁপে রয়েছে। প্রতিটি গাছে ৪০/৪৫টি পেঁপে শোভা পাচ্ছে। একেকটি পেঁপের ওজন ১ থেকে আড়াই কেজি। পেঁপে চাষে তার এই সফলতা দেখে গ্রামের অন্য কৃষকরাও পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

অপর চাষি আসাদুল ইসলাম জানান, আমার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই সংসারের দায়িত্বগুলো আমার উপর পড়েছে। খুবই টেনশনে ছিলাম। তখন আমরা তিন বন্ধু মিলে ৮ বিঘা জমি চার বছর যাবত ভাড়া নিয়ে পেঁপে চাষ করে আসছি। এই পেঁপে চাষের মাধ্যমে আমরা প্রতি বছর তিন লক্ষ টাকার মত আয় করতে পারি। আর এখন টাকার সমস্যা দূর হওয়ায় সংসারের দায়িত্বগুলোও ভালোভাবে পালন করতে পারছি। তবে এই বছর মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এর কারণে গতবারের চাইতে পেঁপের দাম অনেকটাই কম। তবে সরকারিভাবে সহজশর্তে কৃষি ঋণ পেলে অর্থের যোগান এর জন্য আমাদের বেগ পেতে হতো না।আমরাও আমাদের কৃষি খামারকে আরো বড়ো করতে পারতাম। আর এতে অনেক বেকার যুবকের কর্ম সংস্থান হতো।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, তিন যুবকের পেঁপে বাগানের কার্যক্রমের শুরু থেকেই আমরা তাদের দিকে খেয়াল রাখছি। বিভিন্ন সময়ে তাদের পরামর্শ দিয়েছি। মোজাইক ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করেছি কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে। আমরা চেষ্টা করছি এরকম তরুণ উদ্যোক্তাদের তালিকা তৈরি করে তাদের পণ্যগুলোকে একত্রিত করে সঠিক মূল্য নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা।

তিনি আরো জানান, এরকম উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করে তাদের কর্মদক্ষতা আরো বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তবে একই ফসল বারবার একই জমিতে করলে সেখানে ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যায় এবং ফলন কমে যায়। তাই তিনি মাঝেমধ্যে জমিতে অন্য ফসল করার কথা বলেন।

গাজীপুর কথা